‘হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া, আল্লাহ তোকে জান্নাত দান করুক’
আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের জন্মদিন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহাদ। ১৯৯৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আবরার। বেঁচে থাকলে আজ তার ২৫ বছর পূর্ণ হতো। দিনটি উপলক্ষে ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ফাইয়াজ লেখেন, হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া, আল্লাহ তোকে জান্নাত দান করুক।
আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী। তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মা রোকেয়া খাতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন আবরার। পরে নটর ডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে তিনি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে (১৭তম ব্যাচ) ভর্তি হন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার।
আবরার ফাহাদ যখন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তখন পরিবারটিতে নতুন আশার সঞ্চার জেগেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে সব আশা-আকাঙ্খা শেষ হয়ে গেছে। ওই রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। সারা দেশের মানুষকে নাড়া দিয়েছিল এ ঘটনা।
ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার ফাহাদ। এর জের ধরে পরদিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নং কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে তার লাশ সিড়িঁতে ফেলে রাখা হয়।
আরও পড়ুন: বিচারপতি, মেজর আর অধ্যাপকরা মিলে সামলেছেন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, সদস্য মোজাহিদুর রহমান, সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা, সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামীম বিল্লাহ, মাজেদুর রহমান মাজেদ, খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মিজানুর রহমান, শামছুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ এবং এসএম মাহামুদ সেতু।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, সদস্য আকাশ হোসেন ও মোয়াজ আবু হোরায়রা।