ছাত্রলীগ নেতাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখলেন প্রতিপক্ষরা
সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলের সিট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আরেক ছাত্রলীগ নেতার সমর্থকেরা মারধর করে বেঁধে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সানজিদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
হলের শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সানজিদ চৌধুরী গতকাল রাতে শাহপরান হলের ৪২৫ নম্বর কক্ষে গেলে ছাত্রলীগ নেতা সজীবুর রহমানের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেনসহ ২০–২৫ জন মিলে তাঁকে মারধর করেন। পরে হলের ‘গেস্টরুমে’ নিয়ে হাত বেঁধে রাখেন।
এই ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই হলের প্রাধ্যক্ষ মীজানুর রহমান খান, সহকারী প্রাধ্যক্ষ কৌশিক সাহা এবং সমুদ্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুব্রত সরকারসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন এবং দুই পক্ষকে বুঝিয়ে সানজিদকে ক্যাম্পাসের বাইরের একটি ছাত্রাবাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সানজিদ চৌধুরী বলেন, “আমি শাহপরান হলের ৪২৫ নম্বর কক্ষের বৈধ শিক্ষার্থী। রোববার দুপুরে কক্ষে ওঠার জন্য হলের কার্যালয়ে টাকা জমা দিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী ওই কক্ষে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর আমাকে ছাত্রলীগ নেতা সজীবুর রহমানের পক্ষে রাজনীতি না করায় মারধর করা হয়।“
এসময় তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল আসাদের হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেছিলেন। একারণে সজীবুর রহমানসহ তাঁর সমর্থকেরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।”
তবে সজীবুরের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেনের দাবি, সানজিদ চৌধুরী গভীর রাতে হলে উঠেছিলেন। এ সময় ৪২৫ নম্বর কক্ষে আরও দুই ছাত্র ছিলেন। সানজিদ ওই কক্ষে গিয়ে নিজেকে সেখানকার বৈধ শিক্ষার্থী দাবি করেন। যদিও আগে তিনি ৪২৭ নম্বর কক্ষে ছিলেন। এরপর প্রায় দেড় মাস থেকে তিনি বাইরে থাকেন।
এসময় তিনি আরও অভিযোগ করেন, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালে হলে গিয়ে কক্ষের তালা ভেঙে অবস্থান করেছিলেন সানজিদ চৌধুরী । এ নিয়ে একাধিকবার ঝামেলাও হয়েছে।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সজীবুর রহমানের সঙ্গে বেয়াদবি করায় সানজিদকে গ্রুপ থেকে আলাদা করা হয়েছিল। রোববার রাতেও ছুরি হাতে কয়েকজনের ওপর তেড়ে গিয়েছিলেন সানজিদ। পরে তাঁকে আটক করে গেস্টরুমে নেওয়া হয়। সেখানে হলের প্রভোস্টসহ অন্য শিক্ষকদের ডেকে তাঁকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ মীজানুর রহমান খান বলেন, “সানজিদ চৌধুরী হলের বৈধ শিক্ষার্থী নন। আগেও তাঁর বিরুদ্ধে হলের কক্ষের তালা ভেঙে অবস্থানের অভিযোগ রয়েছে। রোববার রাতে তাঁকে মারধর করা হয়েছে কি না, সেটি দেখিনি। তবে তাঁকে গেস্টরুমে হাত বাঁধা অবস্থায় পেয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে হাত খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।” এসময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত করা হবে বলেও জানান প্রাধ্যক্ষ।