০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:০১

পবিপ্রবির শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও নওরোজ জাহান লিপি  © টিডিসি ছবি

নিয়োগ বাণিজ্য ও আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঘটনার কারণ উদঘাটন, দোষী চিহ্নিতকরণ, অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। চলতি মাসের গত ৫ জানুয়ারি এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই শিক্ষক দম্পতি হলেন- কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপি। তাদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের গত বছরের ১৯ জানুয়ারির এক পত্রে আনীত অভিযোগের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে সকল দালিলিক প্রমাণসহ অবহিত করতে হবে মর্মে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পত্র প্রেরণ করেছেন।

ওই অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর মো. ইফতেখারুল আলমকে সদস্য করে একটি ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঘটনার কারণ উদঘাটন, দোষী চিহ্নিতকরণ, অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ, ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে করনীয় নির্ধারণ, সুপারিশ ও সুস্পষ্ট  মতামতসহ রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুল ইসলামের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বায়োচার প্রযুক্তিতে পবিপ্রবি গবেষকের অভাবনীয় সাফল্য

জানতে চাইলে কৃষি ত্বত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপিকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান তাদের বিষয়ে আনিত অভিযোগের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত নই, নিয়োগ দেয় প্রশাসন। কোনো কুচক্রী মহল বা আমার কোন শত্রু পক্ষ আমাদের হয়রানির জন্য এসব করছে। এ কমিটি গঠনের জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরাও চাই বিষয়টি খোলাসা এবং এর একটা সুরাহা হোক।

জানা যায়, পবিপ্রবি প্রভাষক পদে চাকরিপ্রার্থী ছিলেন কুষ্টিয়ার দেবাশীষ মণ্ডল। ওই পদে চাকরি দিতে তার কাছে বিপুল অঙ্কের টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। অথচ বাছাই পরীক্ষার ফলাফলে তিনি প্রথম হয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে,  দেবাশীষের কাছে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, নওরোজ জাহান লিপি ও শাহীন হোসেন ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। দেবাশীষ যেকোনো মূল্যে ওই চাকরি পেতে আগ্রহী ছিলেন।

পরে সাক্ষাৎকার বোর্ড অনুষ্ঠানের আগ মুহুর্তে তার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বাড়তি ৫ লাখ টাকা জোগাড় করতে তাকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। দেবাশীষ ১৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় ওই চক্রটির সাথে আঁতাত করে একই ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর কবিরুল ইসলাম মজুমদারের মদদপুষ্ট রফিক উদ্দিন নামে আরেকজন নতুন প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে তাকে ওই পদে চাকরি দেন।

ওই নিয়োগে দেবাশীষ মন্ডলের সিজিপিএ ছিল ৩.৮২। অথচ ওই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রফিক উদ্দিনের সিজিপিএ ৩.৬৪। এ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যা করেন।