ডিবি-র্যাবের তদন্তের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ বুয়েট শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে ডিবি-র্যাবের তদন্তের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন তার সহপাঠী ও বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ফলে এই ইস্যুতে আপাতত তাদের আর কোন কর্মসূচি থাকছে না। আজ শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানায় তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তাদের ( র্যাব ও ডিবি) সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় মূলত পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন তুলি। তাদের দেখানো এভিডেন্স এবং ডাটার মধ্যে আমাদের করা প্রশ্নগুলোর মোটামুটি সন্তোষজনক উত্তর পেয়েছি। তাদের তদন্ত বা যা যা ডাটা দেখিয়েছেন এতে আর সন্দেহ করার মতো তথ্য আমাদের কাছে আর নাই।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আপাতত ফারদিনের মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের আর কোনো কর্মসূচি নেই। তবে ফারদিনের পরিবার যদি যৌক্তিক কোনো কিছু দাবি করেন আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো। তবে আমাদের কাছে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ বা প্রশ্ন করার মতো কোনো এলিমেন্ট নেই। ভবিষ্যতে যদি নতুন করে কোনো তথ্য আসে তখন বিষয়টা নিয়ে আবার কথা বলব।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে এই ইস্যুতে র্যাব সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের ২১ সদস্যের একটি দল। পরে র্যাব সদর দপ্তর থেকে বের হয়ে বলেছিলেন, র্যাব আমাদের নতুন কিছু তথ্য জানিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে তখন কিছু জানায়নি শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়গুলো জানাবে বলেছিল। একদিন পর আজ সন্ধ্যায় এ বিষয়ে মতামত জানান শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর রামপুরা ব্রীজ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন বুয়েটছাত্র ফারদিন। পরের দিন তার বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের তিন দিন পর গত ৪ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর অর্ধ গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গত বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, ঘটনার দিন (৪ নভেম্বর দিবাগত রাত) ২টা ২৬ মিনিটে ফারদিন সুলতানা কামাল সেতুর তারাব প্রান্তে ছিলেন। ২টা ৩৪ মিনিটে তিনি সেতুর মাঝামাঝি স্থানে আসেন। ওই সময় তিনি সেতু থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন। রাত ২টা ৩৫ মিনিটে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ হয়। ২টা ৫১ মিনিটে তাঁর হাতের স্মার্ট ওয়াচ (ঘড়ি) পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে যায়।
এর আগে বুধবার বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানায়, ফারদিন ডেমরার সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ডিবি পারিবারিক চাপ, দুই ভাইয়ের পড়াশোনার টাকা জোগানো, ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে স্পেনে যাওয়ার টাকা সংগ্রহ করতে না পারাকে উল্লেখ করে।
পরদির গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যান বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা করেন তাঁরা। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, কিছু কিছু জায়গায় গ্যাপ আছে, কিছু অস্পষ্টতা আছে। এগুলো আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার।