কোদাল দিয়ে মাটি কেটে যে বার্তা দিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

মাটি কাটছেন অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার
মাটি কাটছেন অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার  © সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে কেউ হয়তো ভাবতে পারেন কোদাল দিয়ে একজন শ্রমিক জমিতে মাটি কাটছেন। তবে এটি ভেবে থাকলে ভুল করবেন। কেননা যিনি মাটি কাটছেন তিনি শ্রমিক নন; একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তার  নাম অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার। তিনি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য।

জানা গেছে, চাঁবিপ্রবির উপাচার্য হওয়ার পূর্বে অধ্যাপক নাছিম আখতার গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) অধ্যাপক ছিলেন। এখনো ডুয়েট ক্যাম্পাসে তার জন্য বরাদ্দকৃত কোয়ার্টারেই থাকেন। কোয়ার্টারের সামনে ফাঁকা জায়গায় নানা ধরনের শাক-সবজির আবাদ করেন। আবাদের কাজটি মূলত তিনি নিজেই করে থাকেন।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) কোদাল দিয়ে মাটি কাটছিলেন তিনি। এসময় এই কাজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশংসায় ভাসেন অধ্যাপন নাছিম আখতার।

বিষয়টি জানতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস যোগাযোগ করে অধ্যাপক নাছিম আখতারের সাথে। তিনি জানান, তরুণদের মাদকাসক্ত এবং আত্মহত্যা থেকে ফেরাতেই তিনি মাটি কাটার এই ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড করেছেন।

মাদকাসক্ত এবং আত্মহত্যার সাথে মাটি কাটার সম্পর্ক কী? এমন প্রশ্নের জবাবে চাঁবিপ্রবি উপাচার্য জানান, দেখুন আমি একজন গবেষক। গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি, তরুণরা অল্পতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আবার হতাশাগ্রস্ত হয়ে মাদক সেবনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এর মূল কারণ শারীরিক পরিশ্রম না করা। শারীরিক পরিশ্রম না করলে আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলো বের হতে পারে না। আমাদের হার্টের কার্যক্ষমতা কমে যায়। তখন ছোট্ট একটি বিষয়ে আমরা স্ট্রেস নিতে পারি না। আমরা আত্মহত্যা কিংবা মাদকের সাথে জড়িয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, শারীরিক পরিশ্রম না করলে অল্প বয়সেই আমাদের মধ্যে নানা অসুখ বাসা বাধে। তরুণরা এখন অল্প বয়সেই হার্টের সমস্যা আক্রান্ত হচ্ছে। এর পেছনেও কিন্তু শারীরিক পরিশ্রম না করাই দায়ী। তাই আমার এই ভিডিও দেখে তরুণ শিক্ষার্থীরা যেন কায়িক পরিশ্রমের দিকে আগ্রহী হয়। সেজন্য মূলত ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করেছি।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি অধ্যাক নাছিম আখতারকে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে তিনি ডুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যাপক ও কম্পিউটার সেন্টারে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। 

অধ্যাপক ড. নাসিম ইউক্রেনের জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন তিনি। 

২০০৪ সালের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি পান। ২০১০ সালে তিনি রাশিয়ার মস্কো স্টেট ফাইন ক্যামিকাল টেকনোলজির মস্কো স্টেট একাডেমি থেকে ডেটা ওয়্যার হাউস এবং মাইনিং বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ২০১২ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি পান ড. নাসিম। 


সর্বশেষ সংবাদ