‘আমরা কেউই ফারদিনের প্রেমিকা ছিলাম না’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফারদিন নুর পরশকে নিয়ে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আরিশা আশরাফ নামে এক ছাত্রীর একটি আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছাত্রীর নাম আরিশা আশরাফ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের (২০২২) সেশনের। আরিশা ভাইরাল ওই স্ট্যাটাসে বুয়েটছাত্র ফারদিনকে নিজের বন্ধু বলে দাবি করেছেন।
নিখোঁজের পর বুয়েটছাত্র ফারদিনের লাশ উদ্ধারের পর গত ১০ নভেম্বর নিজের ফেসবুক প্রোফাইল আরিশা ভাইরাল স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন। সেখানে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও যুক্ত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ওই স্ট্যাটাসটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার ব্যবহারকারী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি ব্যবহারকারী পোস্টটি শেয়ার করেন।
ফেসবুক পোস্টে আরিশা লিখেছেন, ফারদিন আমাকে ওইদিন ড্রপ করতে আসেনি। আমি আরিশা আশরাফ। আমি আহমাদুল্লাহ্ বুশরা নই। আরটিভির মতো সনামধন্য একটা টিভি চ্যানেলসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলোর এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করাটা আসলে মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতো। সেই সংবাদ এর নিচের কমেন্টগুলো দেখলে একটা সুস্হ মানুষের পক্ষে শান্ত থাকা সম্ভব না।
তিনি লিখেন, আপনারা যারা মিডিয়ার ফেক নিউজ শুনে নিজেদের মতো জাজমেন্ট দিয়ে দিচ্ছেন তারা সবাই দয়া করে শুনে রাখুন, মিডিয়ার করা অধিকাংশ নিউজই মিথ্যা। শুধুমাত্র কিছু একটা লিখতে হবে দেখে তারা মনের মতো লিখে যাচ্ছে। তারা কতটা মাতালের মতো নিউজ বানাচ্ছে সেটার প্রমাণ আরিশা আর বুশরাকে মিক্স আপ করে ফেলা।
আরও পড়ুন: ‘তোমাকে হারানোর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না’—ফারদিনের বান্ধবীর স্ট্যাটাস ভাইরাল
‘‘আজকে আরটিভির নিউজটা দেখে ফারদিন নুরের আপন ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম যে, ‘ভাইয়া কি করব?’ ওরা এতটাই বিরক্ত যে বলল ‘আপু বাদ দেন যা মন চায় করুক ওরা।’’
স্ট্যাটাসের শেষের অংশ সবাইকে মনোযোগ দিয়ে পড়ার তাগিদ দিয়ে আরিশা লিখেছেন, ‘‘ফারদিন নুরের কোনো প্রেমিকা ছিল না। না আমি আর না বুশরা আমরা কেউই তার প্রেমিকা ছিলাম না। আমার ব্যাপারটা আমি পরের পোস্টে ক্লিয়ার করব, আগে বুশরারটা বলি। ফারদিন নুর যখন নিখোঁজ ছিল, তখন তার ল্যাপটপটা পুলিশ সিজ করার আগে তার ভাইয়েরা বুশরার সাথে তার ম্যাসেনজার কথোপকথন সম্পূর্ণ পড়েছে। সেখানে এমন কিছুই পাওয়া যায় নি যেটা বিন্দুমাত্র আপত্তিকর।’’
তিনি লিখেন, ফারদিন আর ১০টা ছেলের মতো ছিলো না। এসব কখনোই তাকে স্পর্শ করতে পারি না। এইজন্য তাকে রোবট নামে ডাকা হতো। নামটা Sudeepa Haldar-এর দেওয়া। তার কথা বলার টপিকই ছিল বই অথবা ভালো কোনো মুভি অথবা ফিলোসোফিক্যাল কোনো আলোচনা। তার সবচেয়ে কাছের মানুষ সাজ্জাজ ভাইয়ার একটা পোস্টের লিংক দিয়ে দিব কমেন্টে, ওইটা পড়লে তার সম্পর্কে একটু আইডিয়া পাবেন।
ফারদিন নুর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় তার বান্ধবী বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। বুশরাও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নিখোঁজের রাতে বুশরা ও ফারদিন একসঙ্গ ঘুরেছেন। পরে রামপুরায় বুশরার বাসায় তাকে নামিয়ে দিয়ে আসেন ফারদিন।
ফারদিনকে নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আরিশা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমার সাথে তার কি সম্পর্ক সেটা আমি নেক্সট পোস্টে জানাবো। দয়া করে একটা মৃত মানুষকে নিয়ে না জেনে তার ব্যাপারে উল্টা পাল্টা কথা রটাবেন না। তার পরিবারের কথাটা একটু ভাবুন। আল্লাহর দোহাই, একটু সমমর্মি হোন।’’