শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের

ফারদিন নূর পরশ
ফারদিন নূর পরশ  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হওয়ার। শিক্ষক হয়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার পাঠ শেখাতে চেয়েছিলেন তিনি।

জানা গেছে, অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন ফারদিন। এজন্য পরিবারের সবাই তাকে খুব আদর করতেন। বুয়েটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। তার বাবা পেশায় একজন সাংবাদিক। পরিবারের তেমন উপার্জন না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কোচিং করিয়ে বাড়িতে খরচের টাকা পাঠাতেন ফারদিন। 

গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষী নারায়ন কটন মিলের পেছনে ভাসমান অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ৪ নভেম্বর ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। কোনো খোঁজ না পেয়ে গত ৫ নভেম্বর সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবারের সদস্যরা।

ফারদিনের বাবা কাজি নূর উদ্দিন বলেন, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিল ফারদিন। সার্বক্ষণিক তাঁর মাথায় ছিল পড়াশোনা আর বিতর্ক। সে কোনো রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সম্প্রতি স্পেনে একটি আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ডিসেম্বরে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তার পাসপোর্ট ভিসাও প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই যাওয়ার আর হয়নি। আমার ফারদিন চেয়েছিল শিক্ষক হতে। ঘাতকেরা সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে।

ফারদিনের মৃত্যুর বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর পকেট থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, ও ব্লুটুথ ইয়ারফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় ফারদিনের বাবা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

ফারদিনের মরদেহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শেখ ফরহাদ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সাংবাদিকদের জানান, ‘বুয়েট ছাত্র ফারদিনের মাথার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার বুকের ভেতরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুতই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ