০৮ নভেম্বর ২০২২, ১৯:০০

বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন ফারদিন

ফারদিন নূর পরশ  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর (পরশ)। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কোচিং করিয়ে বাড়িতে খরচের টাকা পাঠাতেন। অভাব অনটনের সংসারে তিনিই ছিলেন আশার বাতিঘর।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ফারদিন নূর পরশের পরিবারের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফারদিনের ফুপাতো ভাই সাঈদ আল শাকিব জানান, ফারদিনের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল প্রবল। আর সেই কারণেই পুরো বংশের মধ্যে একমাত্র মেধাবী ছেলে হিসেবে তাকেই বিবেচনা করা হতো।  তার বাবার আর্থিক অবস্থা তত ভালো ছিল না। এমনও দিন গেছে ফারদিন উপোস থেকেও পড়াশোনা করেছে। পুরো পরিবারের সবাই ফারদিনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখত। সেই ভাইটাই আজ আর নেই।

ফারদিন নূরের বাবা মঙ্গলবার বেশ কয়েকবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিজ ছেলের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বুয়েটে মেধা তালিকায় তৃতীয় হয়েছিল ফারদিন। সম্প্রতি স্পেনে একটি আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ডিসেম্বরে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তার পাসপোর্ট ভিসাও প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই যাওয়া আর হয়নি। আমার ফারদিন চেয়েছিল শিক্ষক হতে। ঘাতকেরা সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে।

জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর দুপুর ৩টায় বুয়েটের আবাসিক হলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন ফারদিন। বাড়ি০ থেকে বের হওয়ার পর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরেরদিন ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় ফারদিনের নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজের তিন দিন পর গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষী নারায়ন কটন মিলের পেছনে ভাসমান অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ফারদিনের মৃত্যুর বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর পকেট থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, ও ব্লুটুথ ইয়ারফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় ফারদিনের বাবা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

ফারদিনের মরদেহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শেখ ফরহাদ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সাংবাদিকদের জানান, ‘বুয়েট ছাত্র ফারদিনের মাথার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার বুকের ভেতরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুতই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।’