০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৫:৩৮

মাভাবিপ্রবির ভিসি দু’দিন ধরে অবরুদ্ধ

  © সংগৃহীত

দু’দিন ধরে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ‌্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তৃতীয় শ্রেণির (এডহক) কর্মচারীরা। গতকাল বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টা ১৫ মিনিট থেকে এডহকে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন কর্মচারী চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসি বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

দাবিগুলো হলো- তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী বাছাই বোর্ডসমূহ দেওয়ার অনুরোধ;  বিজ্ঞপ্তিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া; অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের শুধুমাত্র মৌখিক বোর্ডের ব্যবস্থা করা; বিজ্ঞপ্তিতে ১৫টি পদের বিপরীতে ২২ জন এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের অসামঞ্জস্য পদকে সামঞ্জস্য করে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা; যথাসময়ে তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করা; চালকদের অধিকাল ভাতাসহ টিএডিএ দেওয়া; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য পৃথক মিনিবাসের ব্যবস্থা করা;  তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ টাঙ্গাইলের লোকদের নিয়োগ দেওয়া; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের নিয়োগে পোষ্যকোঠা নির্ধারণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মোটর কার ও মোটরসাইকেলের জন্য করপোরেট লোনের ব্যবস্থাকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির জন্য একটি কার্যালয়ের ব্যবস্থাকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেশিও অনুযায়ী গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক ও কারিগরি কর্মচারীদের দাপ্তরিক সাজ-পোশাকের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র এবং বাংলাদেশের গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থাকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কোনো চাকরিজীবী চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে মৃত কর্মচারীর পরিবার থেকে একজনকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া।

আন্দোলনকারীরা জানায়, স্মারকলিপি দেওয়ার পরেও গত ২ নভেম্বর কেয়ারটেকার পদের নিয়োগ বোর্ড রাখায় তারা ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী ও তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির কার্যকরী পরিষদ ৩৯তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণির সব সদস্য কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট ও জরুরি সেবাসমূহ চালু থাকবে। এছাড়া অন্যান্য সব পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে।  

তিনি আরও বলেন, তৃতীয় শ্রেণির আন্দোলনের সঙ্গে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতিও একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারার, অভ্যন্তরীণ রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, সিনিয়র শিক্ষক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ভিসি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো যোক্তিক নয়। তারা যে দাবিগুলো জানিয়েছেন সেই দাবিগুলো কোনোভাবেই মানা সম্ভব নয়। এছাড়া তারা অন্যায়ভাবে আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখে রাষ্ট্রের ও আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।