০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২:০৭

বিশ্বজিৎ হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল, জবিতে শিবিরের কর্মসূচি

বিশ্বজিৎ দাসকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেন নিষিদ্ধ সংগঠন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা  © সংগৃহীত

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে শিবির সন্দেহে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেন নিষিদ্ধ সংগঠন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বিশ্বজিৎ হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল। ১৩ বছরে পরলেও আসামিদের ফাঁসির রায় হলেও কার্যকর হয়নি। 

এদিকে বিশ্বজিৎ হত্যার প্রতিবাদে জবি ক্যাম্পাস এলাকায় ‘বিশ্বজিৎ চত্বরে’ হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবিতে মানববন্ধন করবে জকসুর শিবির সমর্থিত প্যানেল ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’।  মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় মানববন্ধন হবে বলে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন জবি শাখা শিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ। 

বিশ্বজিৎ দাসের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের মশুরা গ্রামে ১৯৮৮ সালের ২৮ আগস্ট বিশ্বজিৎ দাসের জন্ম। রাজধানী ঢাকার শাখারীপট্টি বাজারে টেইলার্সের (দর্জি) দোকানের কর্মী ছিল বিশ্বজিৎ। ২০১২ সালের ৯ ই ডিসেম্বর ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলন চলমান ছিল।

সরকার বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে আইনজীবীরা মিছিল বের করলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আইনজীবীদের ধাওয়া করলে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসও ধাওয়া খায়। ধাওয়া খেয়ে বিশ্বজিৎ প্রথমে একটি ডেন্টাল ক্লিনিকে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। প্রাণ ভয়ে বিশ্বজিৎ অন্য ভবনে আশ্রয় নিলে সেখানেও বিশ্বজিৎ দাসের উপর রড ও চাপাতি দিয়ে হামলা চালানো হয়। এসময় রক্তাক্ত বিশ্বজিৎ প্রাণ বাঁচাতে আবার দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা অব্যাহত রাখে।

এক পর্যায়ে বিশ্বজিৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতাল নেওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এসময় প্রাণ বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে বিশ্বজিৎআবারও দৌঁড় দেয় কিন্তু শাঁখারি বাজারের একটি গলিতে গিয়ে ঢলে পড়ে সে। বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলা দায়ের করে আসামীদের মৃত্যুদণ্ডসহ যাবজ্জীবন সাজা দিলেও রায় বাস্তবায়ন করেনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

নিজেকে বাঁচাতে ‘বিশ্বজিৎ বারবার বলেছিল, ‘আমি হিন্দু, শিবির না। আমাকে ছেড়ে দেন।’ অনেকবার বলা সত্ত্বেও তাকে ছাড়া হয়নি। এমনকি বিশ্বজিৎ বলেছিল, আমি হিন্দু, দরকার পড়লে প্যান্ট খুলে দেখেন, তারপরও সে রক্ষা পায়নি।’