শিক্ষা আইনের খসড়া তৃতীয় দফায় ফেরত দিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
তৃতীয়বারের মতো শিক্ষা আইনের খসড়া ফেরত পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বুধবার (১৩ অক্টোবর) নানান ধরনের ত্রুটি, সীমাবদ্ধতা, অস্পষ্টতা ও ঢাউস আকারের কারণে বেশকিছু পর্যবেক্ষণসহ শিক্ষা আইনের খসড়াটি ফেরত পাঠানো হয়।
২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকেই এই শিক্ষা আইন তৈরির কাজ চলছে। মূলত এই আইনের বিভিন্ন দিক প্রথম থেকেই ব্যাপক আলোচনায় এসেছিল। এর মধ্যে আছে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট টিউশন, নোট-গাইড ও সহায়ক পাঠ্য। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ ও বিদেশি শিক্ষাক্রমের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কথাও রয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষক ও পুস্তক সংগঠন আন্দোলনে নেমেছিল। ফলে প্রথমে শাস্তির বিধানসহ একটি খসড়া প্রস্তাব করা হলেও ২০১৩ সালে খসড়া থেকে তা তুলে নিয়ে একটি ‘দুর্বল’ খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। সবমিলে খসড়া তৈরিতে লেগে যায় প্রায় ৫ বছর।
ফলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রথমে শিক্ষা আইনের যে খসড়া করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছিল, তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফেরত আসে। এভাবে পরে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। কিন্তু পরের বছর তা ১২টি পর্যবেক্ষণসহ ফেরত আসে।
সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে খসড়াটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য গত সপ্তাহে পাঠানো হয়েছিল। বিভাগের সংশ্লিষ্ট কমিটি বুধবার (১৩ অক্টোবর) প্রস্তাবিত খসড়াটি পর্যালোচনায় বসে। কিন্তু নানান ধরনের ত্রুটি, সীমাবদ্ধতা র কারণে বেশকিছু পর্যবেক্ষণসহ এবারও খসড়াটি ফেরত পাঠানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সভায় যোগ দেন অতিরিক্ত সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) খালেদা আক্তার। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আইনের খসড়া নিয়ে ওনারা (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ) আলোচনা করেছেন। যখন খসড়াটি আমাদের দেবেন, তখন বুঝতে পারব কেন তারা ফেরত পাঠালেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার অনেক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আইনের আকার ছোট করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আইন হলো নীতিনির্ধারণী নির্দেশনা। এখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খুঁটিনাটি থাকার প্রয়োজন নেই। আইনের নির্দেশনার আলোকে বিধিমালায় সুস্পস্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে বৈঠকে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার আইনের কলেবর ছোট করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আইন অহেতু বড় হলে কার্যক্ষেত্রে সমস্যা হয়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে শিক্ষা আইনের কলেবরও ছোট করার পরামর্শ দেওয়া হয়।