মুজিববর্ষে অবসরপ্রাপ্ত ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী পাচ্ছেন পাওনা টাকা
বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনে অবসর ও কল্যাণ বোর্ডে পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা চাকরি জীবন শেষেও সময় মতো তাদের জমানো টাকা পান না। তবে এবার এই সমস্যা সমাধানে অবসরপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে মুজিববর্ষে উপহার হিসেবে তাদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অবসর ও কল্যাণ বোর্ড। এজন্য সরকারের কাছে ৮০৪ কোটি টাকা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, প্রতি মাসে ছয় শতাংশ হারে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন কর্তন করা হয়। যা থেকে বছরে তহবিলে জমা হয় ৭২০ কোটি টাকা। কিন্তু ভাতা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় হাজার কোটি টাকা। যেখানে ঘাটতি থাকে ২৮০ কোটি টাকা। মুজিববর্ষে ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ করতে চায় বোর্ড। এজন্য দরকার হবে ১ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। মুজিববর্ষের বাকি আট মাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ছয় শতাংশ করে কর্তনের মাধ্যমে আদায় হবে ৪৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি থাকবে ৮০৪ কোটি টাকা। আর মুজিববর্ষের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় এ টাকা বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আchlb করেছে অবসর সুবিধা বোর্ড।
বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ জুলাই যারা আবেদন করেছেন তারা অবসরে যাওয়ার প্রায় তিন বছর পরও পাওনা বুঝে পাচ্ছেন না। চলতি বছরের ২১ মার্চ পর্যন্ত নিষ্পত্তি করার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ২৫ হাজার ৩০৯টি। যা পরিশোধে প্রয়োজন ২ হাজার ৭শ কোটি টাকা।
জমানো টাকা পেতে সংশ্লিষ্টদের পেছনে ঘুরে ঘুরে বিনা চিকিৎসায় অনেকের জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে জানিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা জানান, টাকা তুলতে না পেরে মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না। জীবনের শেষ ইচ্ছে হজ করতে যেতে পারছেন না। অনেক শিক্ষক-কর্মচারী মারা যাওয়ার পর স্বজনরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী জানিয়েছেন, সরকার মুজিববর্ষে সবাইকে কিছু না কিছু উপহার দিচ্ছে। আমরা চাই সারাজীবন আলোর দ্বীপ জ্বালানো এসব শিক্ষকদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে আসতে।
মুজিববর্ষে ১২ হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে উপহার হিসেবে চেক বিতরণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এজন্য ৮০৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
সমস্যা সমাধান বিষয়ে শরীফ আহমদ সাদী জানান, প্রতিবছর বাজেটে বোর্ডের জন্য ২৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে কোনও ঘাটতি থাকবে না। ঘাটতি পূরণে প্রতিবছর বাজেটে এ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হবে। বিকল্প আরও প্রস্তাব তৈরি করে দ্রুত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসব প্রস্তাব জমা দেওয়া হবে। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে- এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিবছর ২০ টাকা করে চাঁদা আদায়, যার মাধ্যমে প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা আয় হবে। এছাড়া শিক্ষক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা।