পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা বিষয়ে বারবার প্রশ্ন হয়েছে: দীপু মনি
‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অনভ্যস্ততার তো একটা বিষয় ছিলই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চেয়ারে সাংবাদিকরা সব সময় বয়স্ক একজন পুরুষকে দেখেই আসছেন। কিন্তু হঠাৎ একজন নারী আসায়, যিনি তখন খুব বেশি বয়স্ক নন, সেটা দেখে একটা ধাক্কা লাগতেই পারে। কিন্তু আমার আগে বা পরে কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা সেই প্রশ্ন কোনও সাংবাদিক বন্ধু করেননি।
সোমবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে অনেকটা আক্ষেপের সুরেই এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার নামের সঙ্গে অনেক এ বি সি ডি লাগানো থাকলেও আমাকে সেটা শুনতে হয়েছে। এটি বারবার শুনতে হয়েছে এবং সব নারীকেই শুনতে হয়।
নির্যাতনের শিকার নারীর প্রতি সমাজে আরেক প্রকার নির্যাতন হয় উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, এটি একটি চরম বৈষম্য। এখন ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে আদালতের নির্দেশনা আছে ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি ছাপানো যাবে না। ধর্ষক বিচারের রায়ে শাস্তি পায়। আর যে নারী ধর্ষণের শিকার হয় তার জন্য প্রতিদিনই মৃত্যুদণ্ড। সারাটা জীবন তাকে অস্পৃশ্য ভাবা হয়। এটা পুরোপুরি মানসিকতার ব্যাপার। একাত্তরে যা হয়েছিল তার থেকে ঘৃণ্য একটি জায়গায় আমরা পৌঁছেছি। ভাষা একটি খুব জরুরি বিষয়। আমরা ভাষা দিয়ে কীভাবে একটি নারীকে দাবিয়ে রাখি। যখন কেউ ধর্ষণের শিকার হয় আমরা বলি সম্ভ্রমহানি হয়েছে। আমাকে কুকুর কামড় দিলে তো সম্ভ্রমহানি হয় না। একটা পুরুষ ধর্ষণ করলে একটা নারীর কীভাবে সম্ভ্রমহানি হয়? সম্ভ্রমহানি তো সেই পুরুষের হওয়ার কথা। আমরা কেন সম্ভ্রমহারা পুরুষ বলি না ধর্ষককে?
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কবি হাসান হাফিজ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু প্রমুখ।