এইচএসসির ফল প্রকাশে শিক্ষাবোর্ডকে বিশেষ ক্ষমতা দিল মন্ত্রণালয়
করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে শিক্ষাবোর্ডগুলোকে বিশেষ ক্ষমতা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষ পদ্ধতিতে ফলাফল তৈরি ও প্রকাশের জন্য এ ক্ষমতা পেল বোর্ডগুলো। এতে শিক্ষাবোর্ডের ফল প্রকাশ করতে আর কোনো বাধা রইল না। অবশ্য এখন ফলাফল প্রকাশের জন্য আনুষ্ঠানিক সম্মতির প্রয়োজন হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ জনুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ক্ষমতা দিয়ে আদেশ জারি করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি চেয়ে আজকালের মধ্যে আবেদন করা হবে। সম্মতি পেলেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা করবে। গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল করে অটোপাস দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলমান করোনাভাইরাসজনিত কারণে এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম), ভোকেশনাল, ডিপ্লোমা-ইন কমার্স-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) আইন, ২০২১ এর ৮(২) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এইচএসসির ফলাফল প্রস্তুত, প্রকাশ ও সনদ বিতরণে শিক্ষাবোর্ডকে ক্ষমতা দেওয়া হলো।
এদিকে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্যে কারিগরি দিক যাচাই-বাছাই করছে শিক্ষাবোর্ডের কারিগরি কমিটি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এবার পরীক্ষার খাতাবিহীন ফলাফল প্রকাশ করার কারণে সবাই বেশি সতর্কতার মধ্যে রয়েছে। ফলাফল তৈরির জন্য মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সফটওয়্যার তৈরি করেছি। তাতে এসএসসি এবং জেএসসি ফলাপল ইনপুট দেওয়া হয়েছে। যারা বিভাগ পরিবর্তন করেছে বা মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছে তাদের জন্য আলাদা বিষয় বলা হয়েছে। সে আলোকে তাদের তথ্যও ইনপুট দেওয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, ‘ফল প্রকাশে মন্ত্রণালয় ক্ষমতা দেওয়ায় আইনগত কোনো বাধা নেই। যেকোনো সময় ফলাফল প্রকাশ করতে পারি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নেওয়াসহ কিছু আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে প্রক্রিয়া শেষ হলে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ করতে পারব।’
গত বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষা না হওয়ায় তারা সবাই অটোপাস পাচ্ছে। তবে আইনি জটিলতা থাকায় পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করতে জাতীয় সংসদে তিনটি বিল পাস করানো হয়। পরে বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করলে গেজেট জারি করে সরকার।
বিল তিনটি হলো ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ এবং ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’। এর ফলে বিশেষ পরিস্থিতিতে মহামারী বা অনিবার্য পরিস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ কিংবা সনদ করা সম্ভব না হলে গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়ন এবং সনদ দিতে পারবে।