মৃত্যুর ৪ মাস পর ইডেনের শিক্ষিকাকে ফরিদপুর বদলি

  © লোগো

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা সামছ আরা জাহান। রাজধানীর ইডেন সরকারি মহিলা কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেখানে চাকরিরত অবস্থায় দুরাযোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। পরে তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) সংযুক্তি দেওয়া হয়। মাউশিতে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় চলতি বছরের ১২ মে তিনি মারা যান।

মারা যাওয়ার ৪ মাস পর বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তাকে ফরিদপুরের সদরপুর সরকারি কলেজে সহকারী অধ্যাপক (উদ্ভিদবিদ্যা) পদে বদলি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারি কলেজ-১ শাখা থেকে উপ-সচিব ফরহাদ হোসেনের স্বাক্ষরে এ আদেশ জারি করা হয়। মৃত শিক্ষককে বদলি করার ঘটনায় শিক্ষা ক্যাডারে কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।

বদলির আদেশ

জানা যায়, এদিন সামছ আরা জাহানসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মোট ৫৭জন কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়। তাদের মধ্যে ১৩ জন অধ্যপক, ২৭ জন সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৭ জন সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন।

সামছ আরা জাহানের সঙ্গে একই স্মারকে বদলি করা হয়েছে সহকারী অধ্যাপক (ভূগোল) নিগার সুলতানা পারভীনকে (আইডি-১৩৬১৬)। মাউশিকে ওএসডি থাকা এই কর্মকর্তাকে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে সহকারী অধ্যাপক (ভুগোল) পদে বদলি করা হয়। জানা গেছে, এই কর্মকর্তা এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে পিএইচডি করার অনুমতি পেয়েছেন। প্রাইমমিনিস্টার ফেলোশিপ নিয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার অনুমতি পান। এরই মধ্যে তার ভিসা হয়েছে এবং করোনার কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফ্লাইট অ্যাভেইলেবল না থাকায় তিনি আটকা পড়েছেন। নিয়মানুযায়ী, প্রেষণ মঞ্জুর হওয়ায় তার বদলি হওয়ার কথা নয়। এরপরও তাকে বদলি করা হয়েছে।

একইদিন সরকারি কলেজ-২ শাখা থেকে নীলফামারি সরকারি কলেজের অধ্যাপক (বাংলা) পদে বদলি করা হয়েছে সৈয়দ মো. মোজাম্মেল হককে (আইডি-৮১০৬)। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই শিক্ষক চলতি বছরের মার্চ মাসে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (পিআরএল) গেছেন। পিআরএলে থাকা এই কর্মকর্তাকেও বদলি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

সামছ আরা জাহানের স্বামী বিসিএস অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম। তাদের দু'টি সন্তান। কন্যা এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। একটি পুত্রসন্তান হওয়ার পর সাড়ে সাত মাসের মাথায় মারা যায়। এরপরই সামছ আরা জাহানের ক্যান্সার ধরা পড়ে। 

মো. মাহবুবুল আলম বলেন, আমার স্ত্রী ক্যান্সারে ভুগে গত ১২ মার্চ মারা যান। তার বদলির বিষয়টি বিস্ময়কর। কারণ নিয়মমাফিক আমি স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। মাউশি থেকে গত ৬ জুলাই আমার স্ত্রীর ল্যাম্পগ্র্যান্ট ইতিমধ্যে মঞ্জুর করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, মৃত, প্রেষণে ও পিআরএল এ থাকা কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়ে থাকলে তা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক কাজ হয়েছে। মাউশির দেওয়া তালিকা অনুসারে আমরা বদলি করেছি। মাউশির দায়িত্ব ছিল সঠিক তথ্য দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করা।


সর্বশেষ সংবাদ