নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী

  © টিডিসি ফটো

দেশের কোন এলাকায় নতুনভাবে কেউ স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে চাইলে আগে সরকারের অনুমতি লাগবে। আবেদন পেলে সরকার ওই স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্যতা ও প্রয়োজন যাচাই করে দেখবে। এরপর সরকার নিজ উদ্যোগে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে দেবে। এখন থেকে এই প্রক্রিয়ায় নতুন স্কুল-কলেজের অনুমোদন দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে নতুন করে এমপিওভুক্তির সমস্যায় পড়তে হবে না।

এছাড়া যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নন-এমপিওভুক্ত রয়েছে বা থাকবে, যোগ্যতা পূরণের শর্ত সাপেক্ষে সবগুলোকে পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

করোনা-কালের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শনিবার রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিয়মিত আয়োজন ‘ক্যাম্পাস টক’ ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য স্থায়ী কোন সমাধানের দিকে মন্ত্রণালয় যাচ্ছে কিনা— জানতে চাইলে সরকারের এই পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

চলতি বছরের গত ২৯ এপ্রিল এক হাজার ৬৩৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নতুনভাবে এমপিওভুক্তি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঁচ স্তরে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির কোড যুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর ২৩ অক্টোবর একযোগে দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়।

এদিকে আসন্ন ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে কমপক্ষে আরও পাঁচ হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষক নেতারা। তবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে উল্লেখ নেই এমপিওভুক্তি বাবদ বরাদ্দ। ফলে নতুনভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়া নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের।

এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত এমপিওভুক্তকরণের জন্য কী ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রাণলয়— এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, এখন থেকে কোন এলাকায় কেউ শিক্ষপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলে আগে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। সরকার দেখবে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে কিনা। তখন সরকার নিজেই সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করবে, কাজেই নতুন করে এমপিওভুক্ত করার সমস্যায় পড়তে হবে না।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া সরকারের গড়ে তোলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য যেসব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বা থাকবে, সেগুলো এমপিওভুক্ত করার জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা বা শর্ত পূরণ করতে হবে আগে। ফলে যোগ্যতা অর্জন সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার ব্যাপারে সরকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

এমপিওভুক্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দেয়া শর্তগুলো পূরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, অতএব আমি অনুরোধ করব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সচেষ্ট থাকতে- তাদের শিক্ষার্থীর যে কাম্য সংখ্যা, পরীক্ষার ফলাফলের যে কাম্যতা রয়েছে— তা পূরণ করতে হবে। কারণ কোন যোগ্যতা অর্জন করার জন্য আগে তার প্রাপ্যতা তৈরি করতে হবে।

এদিকে জেলা-উপজেলা শহর ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ভিন্ন শর্ত দিয়ে এবং শর্ত শিথিল করে আগামীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবি জানায় নন-এমপিও শিক্ষক নেতারা।

ডাঃ দীপু মনি বলেন, ওই ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জনের জন্য সকল শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সদস্যদের একসঙ্গে সে কাজটুকু করতে হবে। আর যত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যোগ্যতা অর্জন করবে তাদেরকে নিশ্চিয় পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্তের আওতায় নিয়ে আসব।

এর আগে আগামী বছরের অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যে এমপিওভুক্তর বরাদ্দ না থাকা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিবছরই যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়ে যাবে। আগামী অর্থবছরেও যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি নিয়ে শিক্ষকরা কোনো অসন্তোষ কিংবা হতাশা প্রকাশ করতে ‘না’ করেছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ