পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. সা’দত হুসাইন ভেন্টিলেটর সাপোর্টে
গুরুতর অসুস্থ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইনকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। তাকে ভেন্টিলেটার সাপোর্টও দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের যোগাযোগ ও ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ডা. সাগুফতা আনোয়ার।
তিনি জানান, ড. সা’দত হুসাইন জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, করোনা নয়। করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে। গত ১৩ এপ্রিল থেকে অচেতন অবস্থায় রয়েছেন তিনি। পিএসসি’র নবম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. সা’দত হুসাইন।
তার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রাকিকউদ্দিন আহমেদ। তার স্ট্যাটাসিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘ফিআমানিল্লাহ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড, সা’দত হুসাইন বিগত ৮ দিন যাবৎ হাসপাতালে অবচেতন অবসতায় ভেন্টিলেটরে আছে। সা’দত দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশোর একজন জনপ্রিয় ও গ্রহনযোগ্য মানুষ।
১৯৬৩ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আমার পুরোনো সহপাঠী বন্ধু। সেই সুবাদে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে সকল সহপাঠীদের মাধ্যমে। এই সুসম্পর্ক ধরে রাখার জন্য সা’দতের সভাপতিতে গঠিত হয়েছে ‘ডিইউ ৬৭ ক্লাব’।
সদালাপি, সৎ, ধার্মিক ও নির্ভিক সা’দত সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পরে থেকেই লেখালিখি, বিভিন্ন গবেষণামুলক কর্মকাণ্ড ও সেমিনার সিম্পোজিয়াম নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুজিবনগর সরকারের উচচপর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন।
তাহলে তার কি হলো। তার করোনা হয়নি, হার্ট অ্যাটাক হয়নি। ওর নিজ উদ্যোগে কভিড-১৯ টেস্টে নেগেটিভ আসে। এরমধে ছেলে-মেয়ের কাছ থেকে জানা যায়, বিগত ১৩ এপ্রিল সকালে হাই টেম্পারেচারে বেহুশ অবস্থাতে সা’দতকে ইউনাইটেড হাসপাতালে আনা হয়েছে। সেই থেকে অবচেতন।
নানাবিধ টেস্ট করার পরে মেডিক্যাল বোর্ড বললো, গুরুতর মেনিনজাইটিস এ্যাটাকে ওর ব্রেইনে ফ্লুইড জমেছে। ফলে ব্রেইনে অক্সিজেন সাপ্লাই ও ব্লাড চলাচল বাধাগ্রস্ত। এদিকে কিডনিসহ অন্যান্য অর্গান অচল। দেশে চলছে লকডাউন। অন্যদিকে হাসপাতালে কয়েকজন ডাক্তার ও নার্স চলে গেছে কোয়ারেন্টিনে। কেননা একজন রোগী নাকি মারা গেছে।
ব্যাপারটি এখন মরার উপর খাড়ার ঘা। এই অবস্থায় সা’দতের পরিবারকে হাসপাতালের বিভিন্ন সুত্রে উৎকন্ঠার মধ্যে খোঁজ খবর নিতে হচ্ছে। সা’দতের স্কুল বন্ধু প্রোকৌশলি সাবেক এমপি আজিম এবং আমাদের সকলের বন্ধু, সাবেক সচিব আইয়ুব কাদরি সবসময়ে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ, কয়েকদিন যাবৎ ডায়ালাইলাসিস ও ব্লাড ট্রান্সফিউশন চলছে। কিন্তু নেই কোন অগ্রগতি। এখন প্রয়োজন রাব্বুল আলামিনের কৃপা ও করুনা। আমি জানি দেশে-বিদেশে সা’দতের অগণিত বন্ধু, হিতৈষী, আত্মার সম্পর্কীয় অন্যান্যরা এবং অগনিত পাঠক ও টকশোর গুনগ্রাহি দর্শক আছেন।
তাই আমি অনুরোধ করছি- আসুন সবাই যার যার যায়গা থেকে নিরবে রাব্বুল আলামিনের কাছে সা’দতের আরোগ্য লাভের জন্য একফোঁটা পানি ফেলি। আরও বলি, ওকে মাফ করে দাও এবং অতি শীঘ্রই সুস্থ করে দাও সা’দতকে। ওর পরিবারকে রক্ষা করো এই অবস্থা থেকে। যাতে করে আগামী শনিবার শুরু হওয়া রোজায় শরিক হতে পারে। আমিন।’