দেশে বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং হবে তিন বছর পরপর
বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ওপর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মতামত পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ খসড়া প্রকাশ করে। তিন বছর পর পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং করা হবে বলে এতে জানানো হয়েছে।
খসড়ায় কমিশনের কার্যাবলি অংশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং নির্ধারণের জন্য উপযুক্ত মানদণ্ড নিরূপণ করবে এবং ওই মানদন্ডের ভিত্তিতে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং নির্ধারণপূর্বক তা জনসম্মুখে প্রকাশ করবে। র্যাংকিংয়ের নিচের সারিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়নে বিশেষ তদারকির আওতায় আনা হবে।
আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে স্থানপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠক্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রেডিট ট্রান্সফার এবং ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক বিনিময় কর্মসূচি গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে কমিশনও এ বিষয়ে উপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারিবে।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্বার্থ এবং কল্যাণ বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় চাহিদা নিরূপণ করবে। উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালাও প্রণয়ন করিবে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আর্থিক চাহিদা নিরূপণপূর্বক প্রয়োজনীয় বাজেট প্রণয়ন করবে।
সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তদারকি করবে কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষা বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য অধিভুক্ত বা অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন দেশি-বিদেশি গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কার্যক্রম তদারকি, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করবে।
আরও পড়ুন: মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ‘এ ব্লক’—সাত দিনের বন্ধ ২০ দিনেও শেষ হল না
বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সকল প্রকার উন্নয়ন পরিকল্পনা পরীক্ষা, নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন করবে উল্লেখ করে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান ও অন্যান্য তথ্যাদি সংগ্রহ করত: পর্যালোচনাপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এর প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার ইত্যাদি বিষয় কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বা বিদ্যমান কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোনো বিভাগ, অনুষদ, ইনস্টিটিউট, প্রোগ্রাম বা কোর্স চালু করার জন্য ন্যূনতম শর্ত নির্ধারণ করবে। যোগ্যতা ও উপযুক্ততার বিবেচনায় যেকোনো স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা প্রদানের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং এ ব্যাপারে জারি করবে প্রয়োজনীয় আদেশ।
প্রকাশিত খসড়ার চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া পাঠানো হলো। এই খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মতামত এ বিভাগে পাঠানোর জন্য বলা হলো। কমিশন গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, কমিশন একজন চেয়ারম্যান, আটজন কমিশনার এবং দশজন খণ্ডকালীন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগকৃত হবেন।