১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৩৫

ন্যূনতম দুই হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ছে শিক্ষকদের

শিক্ষকদের আন্দোলন  © ফাইল ফটো

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হতে পারে। ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হলেও ন্যূনতম দুই হাজার টাকা করে বাড়ি ভাড়া পাবেন তারা। তবে সিনিয়র শিক্ষকরা আরও বেশি পাবেন। এছাড়া চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে এক হাজার টাকা করা হতে পারে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৫ এবং ৮ অক্টোবর নতুন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাব পাঠানোর পর অর্থ মন্ত্রণালয় ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। এজন্য তারা হিসাব-নিকাশ করছেন। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হতে পারে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে ফোন করে বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ করার কথা জানিয়েছে। ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও ন্যূনতম দুই হাজার টাকা করে বাড়ি ভাড়া পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন পে স্কেল আসবে। তখন বাড়ি দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এছাড়া ২০২৬ সালের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্থের সংকট থাকায় আপাতত তারা ২০ শতাংশ হারে ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।’

এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে রুদ্ধদ্বার আলোচনা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ আলোচনা সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, সংস্থাটির অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনার কক্ষে এ আলোচনা হয়। আলোচনায় যুগ্মসচিব এবং উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তারা।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'শিক্ষক-কর্মচারীদের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিপত্র জারির পূর্বে অর্থ উপদেষ্টার অনুমোদন লাগবে। এজন্য ফাইল ডি-নথিতে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।'

এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২টার কিছু আগে শাহবাগে জাতীয় গ্রন্থাগারের আগেই ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় ব্যারিকেডের সামনেই অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষকরা। পরে শিক্ষকরা ব্যারিকেড ভেঙ্গে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।

এদিন সকাল থেকে সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারে সকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করেছেন শিক্ষকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকেন। দাবি আদায়ে তাদেরকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। ব্যানার, ফেস্টুনের মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছেন। ‘বেতন বৈষম্য দূর করো’, ‘শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা করো’ এমন নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেছে শহীদ মিনার এলাকা। কানায় কানায় পূর্ন হয়ে গেছে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। অনেকে আশেপাশের সড়কগুলোর গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানান শিক্ষক নেতারা।

এ সময় এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি বলেন, ব্লকেড কর্মসূচি ১২টায় হওয়ার কথা ছিল কিন্তু জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের নেতারা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে শহীদ মিনারে আসবেন। সেজন্য শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি পেছানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০ শতাংশ মানে ২০ শতাংশ, মেডিক্যাল ভাতা ১৫০০ টাকা মানে ১৪৯৯ টাকার নয় ও উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ মানে ৭৪ শতাংশ নয়। এ তিন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া যাবে না। তিন দফা দাবি থেকে আমরা একচুলও নড়ব না।