সরকারি কলেজ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি অনলাইনে, নীতিমালা জারি
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বদলির নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ নীতিমালা জারি করে। একই সঙ্গে নীতিমালা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে সরকারি প্রভাষক থেকে অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
বদলি নীতিমালা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়নের জন্য 'সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি-পদায়ন নীতিমালা-২০২০' সংশোধনপূর্বক 'সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি-পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫" ৩০ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। সে লক্ষ্যে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের বদলি-পদায়ন সহজতর করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত নির্দেশনাবলি জারি করা হলো।
বর্ণিত বদলি-পদায়ন নীতিমালা অনুযায়ী প্রভাষক থেকে অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে আবেদনকারী তার পিডিএস হালনাগাদপূর্বক অনলাইনে আবেদন করবেন। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে www.shed.gov.bd, www.dshe.gov.bd, এবং www.emis.gov.bd লিংকের নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হবে।
বদলি পদায়ন নীতিমালা অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক/অধ্যাপক/উপাধ্যক্ষ/অধ্যক্ষ/ঢাকা মহানগরসহ সকল বিভাগীয় শহর, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনভুক্ত সকল পদ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পদের নিয়োগ ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত থাকবে এবং সারাদেশের অবশিষ্ট পদের (প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক) বদলিভিত্তিক পদায়নের ক্ষমতা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ন্যস্ত থাকবে।
বদলিভিত্তিক পদায়নের আবেদনপত্র অধ্যক্ষ/প্রতিষ্ঠান প্রধান অগ্রায়ণ করবেন এবং কোন আবেদন পেন্ডিং রাখা যাবে না। অনলাইন ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে প্রেরিত বা উপস্থাপনকৃত আবেদন বিবেচনা করা হবে না।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দাখিলকৃত আবেদন অধ্যক্ষ কর্তৃক অগ্রায়ণের পর মন্ত্রণালয়/ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত নিয়মে প্রতি ১৫ (পনের) দিন অন্তর মূল্যায়ন করবেন এবং বিচেনার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বরাবর পেশ করা হবে।
কোন শিক্ষক/কর্মকর্তা একবার আবেদন করলে পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে আর আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন না।
একজন আবেদনকারী তার পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ ৫টি প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ পাবেন। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মঞ্জুরকৃত আবেদনসমূহের প্রেক্ষিতে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে ওয়েবসাইটে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বদলিভিত্তিক পদায়ন আদেশ জারি করবেন। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা কোনো ক্যাডার পদে বদলিভিত্তিক পদায়নের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
বর্ণিত নীতিমালা বাস্তবায়নের নিমিত্তে জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক আদেশে সারাদেশে কলেজগুলো থেকে প্রয়োজনীয় পদ শূন্যকরণের ব্যবস্থা করবেন। বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাহিরে কোন কর্মকর্তার বিভিন্ন মাধ্যমে রাজনৈতিক তদবির। চাপ সৃষ্টি ও আধা-সরকারি পত্র (ডিও লেটার) উপস্থাপন অসদচারণ বলে গণ্য হবে। অসম্পূর্ণ এবং হালনাগাদ না করা পিডিএসসমূহ বিবেচনায় নেয়া হবে না। বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জারীকৃত এ বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে আগামী জুলাই মাস থেকে কলেজ শিক্ষকদের বদলি সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। গত ৪ জুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিক্ষা উপদেষ্টা এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, 'বদলি, পদোন্নতি এবং প্রশাসনিক অনুমোদনের মতো কাজে যেন শিক্ষকরা হয়রানির শিকার না হন, এই প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ ও স্বচ্ছ করা হচ্ছে। আগামী জুলাই থেকে কলেজে অনলাইন বদলি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এরই মধ্যে যার ডামি প্রেজেন্টেশন এখানে হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সেখানে রাখা হয়েছিল।'
উপদেষ্টা আরও বলেছিলেন, 'আমরা মনে করি এতে শিক্ষকদের বদলির অনেক সমস্যা দূর করা যাবে। এখানে সাবজেক্টিভ এলিমেন্ট প্রশাসকরা যাতে তাদের ইচ্ছামত না করে নিয়ম-নীতির মধ্যে... একেবারেই শক্ত একটা ব্যবস্থা আমরা চালু করতে পারব ১ জুলাই থেকে। একইভাবে আমরা স্কুল পর্যায়ে শিক্ষকদের বদলির সেই ব্যবস্থা আমরা কয়েক মাসের মধ্যে চালু করব।'
'শিক্ষকদের বদলি ট্রান্সপারেন্ট এবং অ্যাকাউন্টেবল করা যথেষ্ট সম্ভব। সেই ব্যবস্থাটা নেওয়া হচ্ছে।'