২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:১২

গুচ্ছে থাকতে দফায় দফায় চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

  © লোগো

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) গুচ্ছ থেকে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়ার থাকতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের দফায় দফায় চিঠি ও নির্দেশনা দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমনকি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বাক্ষরিত একটি আধা সরকারি পত্রও প্রেরণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে একটি জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টা একটি চিঠিতে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এরপর ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়।

এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতির বিষয়ে জরুরি বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বেশি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং তুলনামূলক নতুন প্রতিষ্ঠিত ও জনবল কম থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতি রাখার পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে কোনোরকম চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছিল।

এদিকে, আজ দফায় দফায় দেওয়া এসব চিঠির বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় থেকে এসব গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে একটি জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু উন্নয়ন ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২০ সাল থেকে দেশের সরকারি সাধারণ, কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও মানসিক চাপ কমানো, ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় সাশ্রয় করা এবং মেধাভিত্তিক, স্বচ্ছ ও সমন্বিত পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করা।

এতে আরও বলা হয়, উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীবান্ধব একটি কার্যক্রম হিসেবে গুচ্ছ পদ্ধতি ইতোমধ্যে জনমনে আস্থা অর্জন করেছে। এ পদ্ধতিতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, আবাসন, এবং অন্যান্য খরচ বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। গুচ্ছ পদ্ধতির মাধ্যমে একটি মানসম্মত প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে মেধাভিত্তিক ভর্তি নিশ্চিত হবার পাশাপাশি অভিভাবকগণ একাধিক ভর্তি পরীক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। গত ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় এই পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে পৃথকভাবে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের জন্য তা বাড়তি আর্থিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করবে এবং জনমনে শিক্ষা প্রশাসনের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করবে।

“সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদেরকে পুনরায় গুচ্ছ পদ্ধতির সুফল বিবেচনা করে এ পদ্ধতি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে এসংক্রান্ত একটি সভা করার পাশাপাশি গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল রাখার বিষয়ে একটি পত্র জারি করা হয়েছে। এছাড়া মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা স্বাক্ষরিত একটি আধা সরকারি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এ অবস্থায়, ভিসিদের নেতৃত্বে তার বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”