০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২০:০২

বিশ্ব শিক্ষক দিবস থেকেই এমপিও শিক্ষকদের ইএফটিতে বেতন দেয়া শুরু

ক্লাসে শিক্ষক   © ফাইল ফটো

আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ শুরু হচ্ছে। এদিন থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ইএফটিতে দেয়া শুরু হবে। ওসমানী মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপনের জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের কিছু শিক্ষক-কর্মচারী, যারা ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ইএফটিতে বেতনপ্রাপ্তির জন্য সঠিক তথ্য দিয়েছিলেন তাদের বেতন ইএফটিতে পাঠানো শুরু হবে। ক্রমান্বয়ে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই বাছাই শেষে অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদেরও এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। গতকাল বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা শেষে এমন সিদ্ধান্তে এসেছে শিক্ষা প্রশাসন। 

আরও পড়ুন : বেতন-ভাতায় অনেকটা পিছিয়ে ‘দুর্ভাগা’ বাংলাদেশি শিক্ষকরা

খুব সীমিত পরিসরে শুরু হলেও সব শিক্ষককে এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। 

সরকারি কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পান। তবে সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা রাষ্ট্রায়েত্ত্ব আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনেকটা ‘এনালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। ব্যাংকগুলো মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদন গ্রহণসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও বেতন-ভাতা জোটে তাদের। বিগত সময়ে ঈদের পর ঈদ উৎসবভাতা পাওয়ার ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল শিক্ষাব্যবস্থার সিংহভাগ পরিচালনা করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। ফলে শিক্ষকরাও সরকারি কর্মীদের মত মাসের শুরুতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। 

এমন পরিস্থিতিতে গত ২০২১ সালে ইএফটির মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিছু শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ওই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে অবশেষে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বকালে শিক্ষকদের সে দাবি বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে।

আরও পড়ুন : জানুয়ারি থেকে প্রাথমিক শিক্ষকরা ইএফটিতে বেতন পাবেন

জানতে চাইলে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সরকারি কোষাগার থেকে বেতনভাতা পাওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে জানতে পেরেছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ইএফটিতে বেতনভাতা পাওয়ার যে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তার সঙ্গে আমি একমত। 

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ভোগান্তির জায়গাটি আমরাও অনুধাবন করি। তাই প্রাথমিকভাবে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষককে ইএফটির মাধ্যমে বেতনভাতা পরিশোধ শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর থেকে ওই শিক্ষকরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পাওয়া শুরু করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ইএফটির মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রক্রিয়া হতে হবে ‘ফুলপ্রুফ’। শতভাগ সঠিক তথ্য পেলে তবেই এ প্রক্রিয়ায় তাদের বেতনভাতা পরিশোধ সম্ভব। তাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে যে স্বল্পসংখ্যাক শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই হয়েছে-তাদের দিয়েই এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তবে পর্যায়ক্রমে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে অন্যান্য শিক্ষকদেরও এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।