সভাপতিরা পলাতক, বেতন না পাওয়া কয়েক লাখ শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রণালয়
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছাড়ার খবরে গা ঢাকা দিয়েছেন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরা। সভাপতি না থাকায় বেতন-ভাতার বিল জমা দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। এ অবস্থায় জুলাই মাসের বেতন পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এমপিওভুক্ত কয়েক লাখ শিক্ষক।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষকদের বেতন নিয়ে সমস্যার বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
জানা গেছে, প্রতিমাসে তিন অধিদপ্তরের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ ছাড়ের পর বিল তৈরি করে। এ বিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সভাপতির স্বাক্ষর এবং সিল থাকতে হয়। এবার ছাড় হওয়া জুলাই মাসের চেকের বিলে স্বাক্ষর করার শেষ সময় আগামী ১৪ আগস্ট। এ সময়ের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির সই সংগ্রহ করা কঠিন। এ অবস্থায় এমপিওভুক্ত কয়েক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
যশোরের একটি মাদ্রাসার প্রভাষক মো. আরিফ বিল্লাহ জানান, ১০ তারিখ হতে চললেও এখনো বেতনের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। ইএফটির মাধ্যমে বেতন দেওয়া হলে শিক্ষকদের এমন ভোগান্তিতে পড়তে হত না।
এদিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরা পলাতক থাকায় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা উত্তোলনের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামীকাল রবিবার (১১ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সভা ডাকা হয়েছে। সভা শেষে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি হবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিকল্প হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা প্রশাসকের (ডিসি) স্বাক্ষর নিয়ে বেতনের বিল ব্যাংকে জমা দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আগামীকাল রবিবার জারি করা হতে পারে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো: রবিউল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি না থাকলে কিংবা অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনও এবং জেলার ক্ষেত্রে ডিসিরা বেতন-ভাতার বিলে স্বাক্ষর করতে পারবেন। এভাবে বেতন বিল ব্যাংকে জমা দেওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সবকিছুই অন্যরকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল রবিবার শিক্ষার দুই বিভাগের সচিবদের সঙ্গে সভা হবে। সভা শেষে এ বিষয়ে একটি ‘কমন’ নির্দেশনা আসতে পারে।