০৫ মে ২০২৪, ১৬:৪৭

কর্মকর্তাদের বিরোধিতায় থমকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম

লোগো  © ফাইল ফটো

শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার বিরোধিতায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম থমকে গেল। কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকায় আপাতত বদলির প্রক্রিয়া চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

রোববার (০৫ মে) বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রী বদলি নিয়ে সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের মতামত জানতে চান। এ সময় একটি সংস্থার শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, 'বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। ৯৬ হাজারের বেশি শূন্য পদ থাকলেও ৫ম গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অর্ধেক পদও পূরণ হবে না। এই অবস্থায় বদলি চালু করা হলে গ্রামের সব শিক্ষক শহরে চলে আসবেন। গ্রামের স্কুলগুলোতে খালি হওয়া ওই পদগুলো আর পূরণ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আপাতত বদলি চালু না করতে শিক্ষামন্ত্রীকে মত দেন ওই কর্মকর্তা।'

ওই সূত্র আরও জানায়, শিক্ষা প্রশাসনের আরেক কর্মকর্তা সরাসরি বদলি চালু করা বা গেলে সমপদে এবং সমস্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে এখানে মামলাসহ আরও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় এই প্রস্তাবও আপাতত চালু না করার সিদ্ধান্ত হয়।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মূলত একটি সংস্থার শীর্ষ এক কর্মকর্তা আপাতত বদলি চালু না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তার কথায় যুক্তি থাকায় আপাতত বদলি চালু হচ্ছে না। বদলির প্রক্রিয়া কবে চালু হবে সে বিষয়ে নতুন করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের আগে কমিটির পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেতেন শিক্ষকরা। এভাবে একজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন। তবে ২০১৫ সালের পর নিয়োগ সুপারিশের ক্ষমতা এনটিআরসিএ’র হাতে যাওয়ায় সে সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। নিজ এলাকার বাইরে চাকরি করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সদস্য কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের।

শিক্ষকদের নানা সমস্যার কথা বিবেচনা করে ২০২৩ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। গত বছরের ২২ অক্টোবর বদলি নিয়ে প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সে কর্মশালায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়।

সে পরামর্শের আলোকে বদলির খসড়া তৈরি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয়। খসড়া নিয়ে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মশালায় বদলির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়। আজ রোববার এ নীতিমালা চূড়ান্ত করে পরিপত্র কবে জারি হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা থাকলেও কর্মকর্তাদের বিরোধিতায় তা থমকে গেল।