কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে দ্বিতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির জন্য বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির সুযোগ পাবেন না। অধিক সংখ্যক প্রার্থীর বদলির বিষয়টি দেখভাল করা কঠিন হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কর্মশালায় উপস্থিত শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এনটিআরসিএ প্রথম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। এ নিয়োগ সম্পন্ন হয় ২০১৬ সালের দিকে। প্রথম গণবিজ্ঞপ্তির আগে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা নিজে প্রতিষ্ঠান পছন্দের সুযোগ পেয়েছেন। ফলে তাদের বদলির প্রয়োজন নেই। তাই এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরাই বদলির সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বদলির কর্মশালায় যে সিদ্ধান্ত হলো
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে কর্মরত শিক্ষকের নিজ জেলার ঠিকানা, নারী শিক্ষকদের স্বামীর কর্মস্থল, স্বামীর স্থায়ী ঠিকানার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষকদের নিজ জেলার দূরত্বও বদলির ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে। এছাড়া বদলির ক্ষেত্রে শিক্ষক নিবন্ধনের ব্যাচ বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কর্মশালায় উপস্থিত শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একজন শিক্ষককে বদলির আবেদন করার ক্ষেত্রে বর্তমান কর্মস্থলে অন্তত দুইবছর চাকরি করতে হবে। এরপর তিনি বদলির সুযোগ পাবেন। চাকরিজীবনে কেবল একবারই বদলির সুযোগ দেওয়া হবে। এই বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বদলির জন্য নতুন করে সফটওয়্যার তৈরি করতে হলে অনেক সময় লেগে যাবে। সেজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির জন্য যে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে সেটি আপডেট করা হবে। এরপর ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।
কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা বদলি হবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)। আর মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বদলির বিষয়টি দেখবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। পৃথক দুটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বদলির আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা ম্যানেজিং কমিটির কোনো অনুমতি নিতে হবে না। শিক্ষকরা সরাসরি অনলাইনে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
ওই সূত্র আরও জানায়, বদলির আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ১৬ অক্টোবর থেকে। যা চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বদলির কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য নতুন করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বদলির এই খসড়া শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী চূড়ান্ত করবেন।
এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নিয়ে প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবনা খসড়া আকারে তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়া চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার দ্বিতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো।