২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:০৪

ফেসবুক পোস্টের জেরে উপাধ্যক্ষকে বরখাস্ত: আদেশ স্থগিত হাইকোর্টে

হাইকোর্ট  © ফাইল ফটো

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টের জেরে ফরিদপুর সদর উপজেলার আলহাজ্ব আব্দুল খালেক ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ (ভাইস প্রিন্সিপাল) মো. সেলিম হোসেনকে (ভিপি সেলিম) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয় তা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে তার বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনি এবং ক্ষমতাবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার ও ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।

রিট আবেদনকারী একজন নন এমপিওভুক্ত ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ। সম্প্রতি শিক্ষক সেলিম হোসেনের ফেসবুক আইডি হ্যাক করা হয় বলে তিনি দাবি করেন। এ বিষয়ে আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তীতে ওই ফেসবুক আইডি থেকে সরকার প্রধানকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারকে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার আবেদনকারীর বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অতঃপর রিট আবেদনকারীর হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টটি প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও শিষ্টাচার বহির্ভূত হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতর (মাউশি) গত ১৬ নভেম্বর আবেদনকারীর বেতন-ভাতা বন্ধসহ সাময়িক বরখাস্ত করে।

আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির বলেন, কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রণীত ‘বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলি রেগুলেশন, ২০১৯’ এর আওতায় নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া কলেজটি নন এমপিও হওয়ায় গভর্নিং কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কোনও আইনগত এখতিয়ার নেই রিট আবেদনকারীকে কলেজের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার। 

আইনজীবী শুনানিতে বলেন, বিবাদীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে রিট আবেদনকারীকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন, যা বাংলাদেশ সংবিধানের প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীরা অতি দ্রুতই হাইকোর্টের রুলের জবাব দেবে।