এমপিওভুক্তিতে অটোমেশন প্রক্রিয়া কার্যকর কবে?

ক্লাস নিচ্ছন শিক্ষক
ক্লাস নিচ্ছন শিক্ষক  © ফাইল ফটো

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে হয়রানি হতে হবে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করতে আয়োজিত কর্মশালায় প্রাথমিকভাবে অটোমেশন প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে।

গতকালের কর্মশালায় অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়গুলো রেজ্যুলেশন আকারে বের হলে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন--অতিরিক্ত সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ

কর্মশালায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া অটোমেশন হওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। তবে কবে থেকে এটি কার্যকর হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি কোন ধাপে এনটিআরসিএ শিক্ষকদের কাগজপত্র যাচাই করবে সে বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষকদের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয় নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে। মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ ছাড়া নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় আরেকবার কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এই দুই পর্যায়ের যে কোনো এক ধাপে শিক্ষকদের সনদ যাচাই শেষ করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাউশির একটি বিভাগের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যারা এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হন তাদের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া অটোমেশন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কবে থেকে এটি কার্যকর হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুৃক্তির বিষয়ে আমরা অটোমেশন পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন থেকে শিক্ষকদের পৃথকভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করতে হবে না। এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে যারা সুপারিশ পাবেন তাদের অটো এমপিওভুক্ত করা হবে--অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ডিজি, মাউশি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গতকালের কর্মশালায় অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়গুলো রেজ্যুলেশন আকারে বের হলে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন।

জানা গেছে, কোনো শিক্ষক-কর্মচারীর নতুন এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) পেতে গেলে অনলাইনে ফাইল প্রথমে সংশ্নিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ে যায়। নানা কারণে এসব ফাইল বিভিন্ন পর্যায়ে আটকে থাকে। এর ফলে সদ্য নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন ছাড়াই চাকরি করেন। অথচ তারা এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে সুপারিশ পাওয়ার সময় একই ধরনের কাগজপত্র জমা দিয়ে থাকেন। এই শিক্ষকদের বর্তমানে পুলিশ ভেরিফিকেশনও করা হচ্ছে।

ওই সূত্র আরও জানায়, এমপিওভুক্তির আবেদনের শিক্ষকদের নানা ভাবে হয়রানি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগও ওঠে। এতে শিক্ষকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। শিক্ষকদের এসব ভোগান্তি কমাতে পৃথকভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য নতুন করে এমপিও নীতিমালা সংশোধন করা হবে। নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে এনটিআরসিএ’র সুপারিশের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সকল ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এরপর তারা অটো এমপিওভুক্ত হবেন। পৃথকভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করতে হবে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুৃক্তির বিষয়ে আমরা অটোমেশন পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন থেকে শিক্ষকদের পৃথকভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করতে হবে না। এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে যারা সুপারিশ পাবেন তাদের অটো এমপিওভুক্ত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে সুপারিশ পান তারা  সুপারিশ পাওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের কাগজপত্র জমা দেন। এই কাগজপত্র নতুন করে জমা দেওয়ার কিছু নেই। শিক্ষকদের হয়রানি বন্ধ করতে এখন থেকে এনটিআরসিএ’র সুপারিশের মাধ্যমেই শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারবেন। তাদের পৃথকভাবে আবেদন করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ