০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৩

দেশে ‘প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে

দেশে ‘প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে  © ফাইল ফটো

বিদেশগামী মানুষের প্রবাস জীবনের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশে ‘প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের পক্ষে মত দিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে জনমত যাচাইয়ের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি তুলে ধরেন। পরে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বছরে আমাদের ৮-১০ লাখ লোক বিদেশে যায়। তাদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা কী দিয়েছে? কিছুই করেনি। তাদের ভাষাও শেখায়নি। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন জ্ঞান দেওয়া হয়নি। আমাদের ‘প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়’ দরকার। যেখানে প্রবাসীদের ছেলে-মেয়েরা পড়বে এবং প্রবাসে গিয়ে কী করবে তার দীক্ষা লাভ করবে।

তিনি বলেন, অল্পকিছু লোক দেশে চাকরি পায়। প্রবাস ছাড়া কোথাও আমাদের জব মার্কেট নেই। এজন্য প্রবাসীদের জন্য আলাদা নজর দেওয়া উচিৎ। শিক্ষাব্যবস্থায় সেই দক্ষতা উন্নয়নে মনোযোগ না করে গতানুগতিক বিশ্ববিদ্যালয় করলে বেকার বাড়বে, দেশের খুব একটা লাভ হবে না রেমিট্যান্সও বাড়বে না। 

দেশের কোন খাতে কত জনবল দরকার তা নিয়ে কোন গবেষণা হয়নি দাবি করে সংশোধনী আলোচনায় শামীম হায়দার বলেন, আমাদের কোনো গ্লোবাল গবেষণা হয়নি। সারা পৃথিবীতে লরি চালক কত দরকার, নার্সিং দরকার কতজন, আমাদের দেশে দরকার কতজন, সেসব বিষয় নিয়ে গবেষণা হয়নি।

‘‘আমরা বানাচ্ছি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতির স্নাতক কিন্তু প্রয়োজন হলো নার্স, চালক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এই গবেষণা বাংলাদেশ কখনোই হয়নি। এটা না করার কারণে আমাদের স্নাতকরা বেকার হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবাসীদের ভর্তির সুযোগ

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বক্তব্যে জবাবে জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের উচ্চশিক্ষার প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। সারাদেশে ২২৫৭টি কলেজে এসব শিক্ষার্থীরা পাঠদান নিচ্ছেন। আমরা এ মেয়াদে দায়িত্বগ্রহণের পরপরই এসব প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি।

তিনি বলেন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন ১২টি পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সংযুক্তির কাজ আগামী মার্চ থেকে শুরু হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীরা যে ডিগ্রিই নিচ্ছেন না কেন, সেটি শেষ করার পর এ ১২টি বিষয়ে একবছর মেয়াদী পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিতে পারবেন। এছাড়াও এ বছর থেকে ১৯টি শর্ট কোর্সও যুক্ত করা হচ্ছে। 

‘‘এসব কোর্সগুলো বর্তমান সময়ে দেশে এবং বিদেশের চাকরির বাজারের যে চাহিদা সেটি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে সাজানো হয়েছে। এ বিষয়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এসব কোর্সগুলো খুব শিগগিরই শুরু হবে।’’

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, এসব কোর্সগুলোর সঙ্গে আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকবে। যেমন কোনো একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন না কেন তার সঙ্গে ভাষা, আইসিটি, অন্ট্রাপ্রেনারশিপ আরেকটি হচ্ছে সফট স্কিল। অন্যান্য দেশের তুলনায় চাকরির বাজারে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা যে বিষয়ে পিছিয়ে পড়েন সে বিষয়গুলো যুক্ত করা হচ্ছে।