বয়সের বাধা তুলে দেয়ার পরও শিক্ষার্থী কমেছে পলিটেকনিকে!
পলিটেকনিকে ভর্তির হার বাড়াতে নানা ধরনের উদ্যাগ নিয়েছে সরকার। সে মোতাবেক সব বয়সের শিক্ষার্থীদেরও ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আপত্তিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে এই সুযোগ দিয়েও শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। গতবারের চেয়ে এবার আরও কম শিক্ষার্থী পলিটেকনিকে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, গত বছর পলিটেকনিক কলেজগুলোয় ভর্তির জন্য আবেদন করে ৮৯ হাজার শিক্ষার্থী। আর এবার প্রথম ধাপে আবেদন পড়েছে ৮৮ হাজার, গতবারের তুলনায় যা ১ হাজার কম। নীতিমালা পরিবর্তনের মাধ্যমে বয়সের বাধা না থাকলেও ‘বেশি বয়সের’ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন মাত্র ৯৮০ জন।
তারা সবাই ২০১৫ সাল কিংবা তার আগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। শুধু একজন শিক্ষার্থী ১৯৯৪ সালে এসএসসি পাস করেছেন। অথচ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর আগের এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের পলিটেকনিতে ভর্তির দাবি জানিয়েছিলেন কলেজের অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা। সে বিবেচনায় ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উত্তীর্ণদের চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সুযোগ রেখে প্রস্তাবনা তৈরি করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
তবে সেই প্রস্তাবনা আমলে না নিয়ে সব বয়সের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়। এতে বৃদ্ধদেরও পলিটেকনিকে পড়াশোনার দ্বার উন্মুক্ত হয়। এতে তীব্র আপত্তিও ছিল সংশ্লিষ্টদের। ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে কর্মসূচিও পালন করে। তবে সিদ্ধান্তে অনড় থেকে নীতিমালাও জারি করে মন্ত্রণালয়।
এছাড়া পলিটেকনিকে ২০ শতাংশ নারী কোটা থাকলেও এবার আবেদন করেছে ১০ হাজারেরও কম। নারী কোটা পূরণ করতে হলে তাদের সবাইকে ভর্তি করতে হবে। অথচ নারীদের জন্য চারটি বিশেষায়িত পলিটেকনিকের এক হাজার আসনও পূরণ হয় না। বাকি পলিটেকনিকগুলোয় ছেলেদের দিয়ে আসন পূরণ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কারিগরি শিক্ষা খাতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ভর্তির হার বাড়ছে না। সরকারের সিদ্ধান্তে নিয়মিত শিক্ষার্থীরাও কারিগরিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশের (টেকবিডি) সভাপতি প্রকৌশলী আবদুল আজিজ বলেন, ‘ভর্তি বাড়াতে হলে চার বছরের স্থলে কোর্স দুই বছর করতে হবে। আর এইচএসসি সমমান করা হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। অথবা চার বছর কোর্স ঠিক রেখে দুই বছরের গ্র্যাজুয়েশন করা যায়। বেশি বয়সীরা এলে পরিবেশ নষ্ট হবে। হোস্টেল দখল, নির্যাতন, রাজনীতি বেড়ে যাবে।’
এ বিষয়ে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোরাদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘এ নিয়ে মন্তব্য করার সময় হয়নি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে ভর্তির সুযোগ এখনও আছে।’ সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী আরো বৃদ্ধির সুযোগ আছে বলেও মনে করেন তিনি।