সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান না ৬০ শতাংশ অভিভাবক
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ এই ছুটি আরও একদফা বাড়িয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। এরমধ্যেও কিছু মানুষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিল্প-কারখানা, গণপরিবহন সবকিছু খুলে দেওয়া গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সমস্যা কোথায়।
তবে অভিভাবকদের বড় অংশই তাদের সন্তানকে এখনই স্কুলে পাঠাতে নারাজ। তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন। এছাড়া অনেকে অটো প্রমোশন দিয়ে দেওয়ার পক্ষে। অবশ্য কিছু অভিভাবক চাইছেন, অক্টোবরের ছুটি শেষ হলে তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে।
অভিভাবকদের মতামত জানতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক গ্রুপে একটি পোলের আয়োজন করা হয়। সেখানে ২১০ জন অভিভাবক তাদের মতামত জানিয়েছেন। পোলে প্রশ্ন ছিল, ‘করোনাভাইরাস মহামারি: আপনার সন্তানকে কখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবেন?’
পোলে ১২০ জন অভিভাবক ‘করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে’ তাদেরকে সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান বলে জানিয়েছেন। পোলে অংশ নেওয়া মোট অভিভাবকের মধ্যে যার পরিমাণ প্রায় ৬০ শতাংশ। এছাড়া ৩৬ জন অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে অটো প্রমোশন দিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পোলে অংশ নেওয়া অভিভাবকদের মধ্যে যা প্রায় ১৮ শতাংশ।
এদিকে ৩১ জন অভিভাবক জানিয়েছেন, অক্টোবরে ছুটি শেষ হলে তারা তাদের সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান। পোলে অংশ নেওয়া অভিভাবকদের মধ্যে যা মাত্র ১৫ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এছাড়া ‘করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে’ সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান ৯ জন অভিভাবক।
এর আগে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পাঠকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে তারা কী ভাবছেন। পাঠকদের নিকট প্রশ্ন ছিল, ‘করোনাভাইরাস: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?’ এতে প্রায় ২২ ঘন্টায় অন্তত এক হাজারের বেশি পাঠক তাদের মতামত জানান।
করোনা: স্কুল-কলেজ খোলার বিপক্ষে অধিকাংশ মানুষ
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ এই ছুটি আরও একদফা বাড়িয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। এরমধ্যেও কিছু মানুষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিল্প-কারখানা, গণপরিবহন সবকিছু খুলে দেওয়া গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সমস্যা কোথায়।
এর আলোকে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তারা কী ভাবছেন। পাঠকদের নিকট প্রশ্ন ছিল, ‘করোনাভাইরাস: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?’ এতে প্রায় ২২ ঘন্টায় অন্তত এক হাজার পাঠক তাদের মতামত জানিয়েছেন।
ওই মতামতের আলোকে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল ও কলেজ খোলার ক্ষেত্রে প্রায় সবার নিকট থেকেই একই ধরনের মতামত পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে স্কুল-কলেজ খোলার কোনো সুযোগ নেই। আর অফিস-আদালত, কারখানা, গণপরিবহন খুলে দেওয়া হয়েছে ‘পেটের দায়ে’, এরসঙ্গে মিলিয়ে সন্তানদের ঝুঁকিতে ফেলার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন তারা।
এক্ষেত্রে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ হলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে মত তাদের। অবশ্য পাঠকদের খুব সামান্য অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কলেজও খুলে দেওয়ার পক্ষে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পক্ষে। এছাড়া অনলাইন ক্লাসও চলারও পক্ষে তারা। তাদের মতে, হলে সব ধরণের সুরক্ষা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া যেতে পারে।
এর পক্ষে তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন, সেশনজট, মানসিক চাপ, অনেক শিক্ষার্থীর আয় বন্ধ হয়ে নিজে পরিবার বিপদে পড়া, বাড়িতে নানা সমস্যা তৈরি হওয়াসহ নানা বিষয়ের কথা বলেছেন। অবশ্য হলের সুরক্ষা নিয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত অনেকেই দিতে পারেননি।
এই শিক্ষার্থীদেরই একটি অংশ আবার এখনই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিপক্ষে। তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ হলগুলোতে চারজনের রুমে থাকেন আট জন।
আর গণরুমে ২০ থেকে ৭০/৮০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী থাকেন। করোনা পরিস্থিতিতে এসব হল খুলে দেওয়া হলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষার চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি বলে মত তাদের। ভ্যাকসিন আসা পর্যন্ত অপেক্ষার কথা বলছেন তারা।