সাত দিনের মধ্যে টিউশন ফি মওকুফ চান অভিভাবকরা
করোনাকালীন টিউশন ফি মওকুফের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। এ সময়ের মধ্যে ছয় মাসের ফি মওকুফ না করা হলে সারা দেশে একযোগে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা। সোমবার (১৭ আগস্ট) বেইলি রোডের ভিকারুননিসার মূল ক্যাম্পাসের সামনে আন্দোলন কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেয় ফোরাম।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, করোনার কারণে অনেক অভিভাবকের আয় বন্ধ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকের বেতনভাতা কমে গেছে। চাকরিও হারিয়েছেন অনেকে। উপার্জন বন্ধ ব্যবসায়ীদেরও। এ পরিস্থিতিতে ছয় মাসের ফি মওকুফের ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তারা। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি মন্ত্রণালয়।
এখন সাতদিনের মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, টিউশন ফি আদায় সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পরিকল্পনা ছিল। খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু উচ্চ আদালতে একটি মামলা হয়েছে। তাই মামলার সঙ্গে যাতে নির্দেশনার বিরোধপূর্ণ অবস্থান তৈরি না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হচ্ছে।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ৬ মাসের টিউশন ফি মওকুফে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কয়েক মাস আগে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গত জুন-জুলাইয়ে এ বিষয়ে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি উভয় পক্ষকে মানবিক আচরণের অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
মহামারীর মধ্যেও অভিভাবকদের অনেকে পাওনাদি পরিশোধ করেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, আয়-উপার্জন না থাকায় খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটছে। এ অবস্থায় ফি পরিশোধ করতে পারেননি। দুই সন্তান স্কুলে পড়ে। ফি না দেয়ায় তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়নি।
উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক জানান, অভিভাবকদের নিয়মিত এসএমএস ও মোবাইল ফোনে টিউশন ফি দেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন। করোনার মধ্যে ক্লাস হয়নি। দুই মাস ধরে মেসেঞ্জারে ক্লাস নিচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ ফি আদায় করছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অভিভাবক সংগঠনের প্রতিনিধি আনোয়ার কবির ভূঁইয়া পূলক, মাজেদুল ইসলাম সুজন, জেমিন, মিজানুর রহমান, শাকিল প্রমুখ।
করোনার কারণে আপাতত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ছুটি আরও বাড়তে পারে বলে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে ২৫ আগস্ট সিদ্ধান্ত জানানো হবে।