১৯ জুলাই ২০২০, ০৮:১২

বাসা ভাড়া দিতে না পেরে স্কুলে শিক্ষিকা, রাস্তায় ফলের দোকান

  © সংগৃহীত

আদাবর বাজারের কাছে করোনাকালে সুনসান পড়ে আছে কিন্ডারগার্টেন পপুলার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। করোনার কারণে প্রায় চার মাস স্কুলটি বন্ধ। ফলে শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়ও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন খরচ কমানোর জন্য বাসা ছেড়ে নিজের স্বামী আর দুই মেয়েসহ স্কুলে উঠেছেন প্রধান শিক্ষক আমিনা বেগম। ওই ভবনের দোতলায় থাকতেন তিনি। 

স্কুলের ভাড়াও বাকি পড়েছে। দুজন কর্মচারী নিয়ে আমিনা এখন রাস্তার ধারে টেবিল পেতে ফল বিক্রি করছেন। কাছেই সম্পা মার্কেটের কাছে অস্থায়ী দোকানটির ব্যানারে লেখা, ‘১০০% ফরমালিনমুক্ত রাজশাহীর বিখ্যাত আম ও লিচুর মেলা’।

আদাবর বাজারের কাছেই ওই বাসাটি। গাড়িবারান্দায় রঙিন দোলনা। নিচতলায় কয়েকটি ঘরের বন্ধ দরজার ওপর লেখা শ্রেণির নাম। দেয়ালে ফুল-লতাপাতা আঁকা। একটি ঘরের দরজা একটু ফাঁক করা, ভেতরটা অন্ধকার। সেখানকার একটি ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক আমিনা বেগম।

কারণ আপাতত দুটি ক্লাসঘরেই তাঁর সংসার। নিজের দোকান দেখাতে নিয়ে গিয়ে আমিনা সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আম কিছুদিন পর শেষ হয়ে যাবে। তখন কী করব? কারও কাছে হাত পাততে পারব না।’

তার স্কুলটি নিম্নবিত্ত এলাকায়। শিক্ষার্থীদের বেতন কম। কিন্তু এখন তাও অভিভাবকরা দিতে পারছেন না। উজান আহমেদ স্কুলের ২৩৫ জন শিক্ষার্থীর একজন। তাঁর গাড়িচালক বাবার বেতন করোনার কারণে অর্ধেক হয়ে গেছে।

স্কুলটিতে শিক্ষক আছেন ১২ জন। তাঁরা বেতনের সঙ্গে টিউশনি দিয়ে চলতেন। এখন সবই বন্ধ। অনেকে ঢাকা ছেড়েছেন। শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। তিনি বললেন, সুদিনের আশা মিলিয়ে যাচ্ছে।