১৩ জুলাই ২০২০, ১৩:৫৮

করোনার কারণে এক কোটি শিশু আর কখনও স্কুলে যেতে পারবে না

  © ডয়েচে ভেলে

করোনা পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্বের গরিব দেশগুলি শিক্ষাখাতে খরচ কমাবে। সেই অর্থ খরচ করা হবে বাকি জায়গায়। তার ফলে প্রায় ৯৭ লাখ শিশু আর কখনও স্কুলের মুখ দেখবে না। নয় থেকে ১২ কোটি শিশুর পরিবার গরিব হবে। যুক্তরাজ্যের সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব জরুরি অবস্থা আসতে চলেছে।

সংগঠনের দাবি, বিশ্বের ১২টি দেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বাকি গরিব বা মাঝারি আয়ের দেশের অবস্থাও ভাল নয়। সংগঠনটির হিসেব অনুযায়ী, করোনার ফলে দেশগুলি শিক্ষাখাতে সাত হাজার ৭০০ কোটি ডলার কাটছাঁট করবে। তার প্রভাব পড়বে প্রায় এক কোটি শিশুর ওপর। তাদের জীবন থেকে স্কুল হারিয়ে যাবে।

যে ১২টি দেশের অবস্থা সব চেয়ে খারাপ, সেই তালিকায় আছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, ইয়েমেন, গিনি, মরিটেনিয়া, লাইবেরিয়া, চাদ।

ইউনেস্কোর তথ্য উদ্ধৃত করে সংগঠনটি জানিয়েছে, গত এপ্রিলে মোট ১৬০ কোটি তরুণ-তরুণীর স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থাৎ, প্রায় ৯০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী করোনার ফলে প্রভাবিত হয়েছে। অনেক দেশে এটা সাময়িক বন্ধ হওয়া। করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে তা আবার খুলবে। কিছু দেশে খুলতেও শুরু করেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, মানুষের ইতিহাসে এই প্রথম বিশ্বজুড়ে শিশুদের পুরো প্রজন্মের শিক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত লেগেছে। তাই সংগঠনের রিপোর্টের শিরোনাম হলো ‘আমাদের শিক্ষা বাঁচাও’।

রিপোর্ট বলছে, নয় থেকে ১১ কোটি ৭০ লাখ শিশু আরও গরিব হয়ে যাবে। ফলে তারা আর স্কুলে থাকবে না। তারা বাধ্য হয়ে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কাজ করবে, মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাবে, শিশুদের পড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না পরিবারগুলোর। ফলে প্রায় এক কোটি বাচ্চা আর স্কুলের মুখ দেখবে না।

রিপোর্ট অনুসারে, ছেলেদের থেকে মেয়েদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। লিঙ্গ বৈষম্য বাড়বে। আগে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। কম বয়সী মেয়েদের গর্ভবতী হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখন থেকে ২০২১-এর শেষ পর্যন্ত কম ও মাঝারি আয়ের দেশগুলি শিক্ষাখাতে সাত হাজার ৭০০ কোটি টাকা কমাবে। তার সরাসরি প্রতিক্রিয়া হবে শিশুদের ওপর। তাদের আর স্কুলে পড়া হবে না।

তাদের আবেদন, সরকার ও বিত্তবানরা যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দরাজ হাতে সাহায্য করে। আর ঋণদানকারী সংগঠন যেন শিক্ষাক্ষেত্রে ঋণ মকুব করে। তা হলে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হতে পারে। পরিস্থিতি ভয়াবহ। করোনা হওয়ার আগেই বিশ্বজুড়ে স্কুলে না যাওয়ার তালিকায় ছিল কয়েক কোটি বাচ্চা। তার ওপর যদি প্রায় এক কোটি বাচ্চাকে স্কুলে না গিয়ে কাজের খোঁজে যেতে হয়, তা হলে পরিস্থিতি কতটা খারাপ হবে তা সহজেই অনুমেয়। খবর: ডয়েচে ভেলে।