স্কুলবাসে ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উল্লাস
মাত্র ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে যেকোনও দূরত্বে চলাচল করতে পারবে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য বিআরটিসির ১০টি দ্বিতল স্কুলবাসে। ৫ টাকার বাসে শিক্ষার্থীদের লাখ টাকার হাসিতে অভিভাবকরাও খুশি। শিক্ষার্থীদের বাসের দায়িত্বরত কর্মচারীরাও বেশ উৎফুল্ল। তাছাড়া প্রতিটি দ্বিতল বাস নানা রঙ বেরঙের বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের একটি বাস পরিদর্শন করে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উল্লাসের কমতি নেই। বাসের মনোরম পরিবেশে বসে সহপাঠীরা গল্প, আড্ডা, আনন্দে মশগুল।
এটি চট্টগ্রামের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ আনন্দে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা। মহৎ এ উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলে।
প্রতিটি বাসে ৩০টি ফ্যান, ১২টি বাতি, ৭৩টি বসার সিট, একজন ড্রাইভার ও একজন মহিলা এবং একজন পুরুষ হেলপার দায়িত্বে রয়েছেন। পুরো বাস সিসি ক্যামেরার আওতাধীন। বাসের নিচের তলায় ছাত্রী এবং উপরের তলায় ছাত্রদের জন্য আসন বিন্যাস করা হয়েছে।
সুমাইয়া আহমেদ নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য বাস উপহার দিয়েছেন সরকার। এতে আমরা অনেক খুশি এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কিন্তু যে শিক্ষার্থীরা এখনও অনেক ছোট। বিশেষ করে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে তারা কিভাবে অভিভাবক ছাড়া বাসে একা যাওয়া আসা করবে। আমরা এই ছোট ছোট বাচ্চাদের কিভাবে একা ছেড়ে দিবো। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটি দাবি- যেসব শিক্ষার্থীর বয়স কম এবং যারা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে তাদের অভিভাবকরাও যাতে স্কুল বাসে করে চলাফেরা করতে পারে সে অনুমতিটা যেন দেন।
দায়িত্বে থাকা বাসের দুই হেলপার নাজমা আক্তার ও নুরুল নবী বলেন, পুরোপুরি দায়িত্বের সাথে আমরা কাজ শুরু করেছি। সব শিক্ষার্থীরা আমাদের ছেলেমেয়ে এবং ভাইবোনের মতো। আমরা তাদের পুরোপুরি নিরাপত্তা দিচ্ছি। নিদিষ্ট স্থানে তাদের আমরা পৌঁছিয়ে দেই। সকলের সাথে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করি। তাদের হাত ধরে তুলি এবং হাত ধরে যথাস্থানে নামিয়ে দেই।
তারা আরও বলেন, প্রথমদিন হওয়ায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। তাছাড়া অনেকে হয়তো জানেন না স্কুল বাস চালু হয়েছে। স্কুল শিক্ষার্থী দেখলেই তাদের আমরা ডাক দেই এবং আইডি কার্ড দেখে বাসে তুলে নিই। এমনও দেখা গেছে, অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে আলাদা গাড়ি করে যাচ্ছেন। ডাক দিলেও কোনও সাড়া দিচ্ছে না। হয়তো নিরাপত্তা নিয়ে কেউ ভয় পাচ্ছেন। তারা যদি এসে আামাদের সাথে কথা বলেন এবং জানার চেষ্টা করেন তাহলে হয়তো ভয় আর থাকবে না।
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক মারুফ হাসান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলাম এবং ডিসির কাছে ১০টি দাবি দিয়েছিলাম। এর মধ্যে একটা দাবি স্কুল বাসের জন্য ছিল। পরবর্তীতে আামাদের সাথে মিলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়েছিলেন তিনি। একবছর পূর্বেই আমরা ১০টি বাস পেয়েছিলাম। কিন্তু ভাড়া এবং স্পন্সরের অভাবে বাসগুলো চালু করা যায়নি। অবশেষে আজ সার্থক হলাম।
তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে বাসে বসে আছি। তবে শিক্ষার্থী কম। কারণ খবরটি এখনও সবার কাছে পৌঁছায়নি। তবে কয়েক দিন পর জানাজানি হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে।