২৭৬২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে চায় সরকার
আবারও প্রায় আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিকট প্রয়োজনীয় অর্থ চেয়ে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দুই মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, এবার দুই হাজার ৭৬২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য হিসেবে নির্বাচিত করেছে সরকার। এগুলো এমপিওভু্ক্ত করতে মন্ত্রণালয়ের এক হাজার ২৪৭ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এ টাকা দিলেই এমপিওভুক্তির কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে বেতন-ভাতা বাবদ মূল বেতন ও কিছু ভাতা পান। ফলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানিয়ে থাকেন। গত কয়েক বছরে এ নিয়ে একাধিকবার আন্দোলনও করেছেন ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো শিক্ষা মন্তণালয়ের এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য চারটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে আবেদন নেওয়া হয়। এ মানদণ্ডগুলো হলো প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষায় পাসের হার। প্রতিটি মানদণ্ডের জন্য ২৫ নম্বর দেওয়া হয়।
এজন্য মোট ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে, এমপিও নীতিমালা সব শর্ত পূরণ করায় যোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়েছে দুই হাজার ৭৬২টি। এরমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে স্কুল ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি। এছাড়া কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অধীন মাদরাসা ৫৫১টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি।
এরমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রায় ৭২৮ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। বাকি টাকা লাগবে কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের প্রতিষ্ঠানের জন্য।
এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে সরকার। এরপর থেকে এমপিওভুক্তির দাবিতে ননএমপিও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করেন। আন্দোলনের মুখে গত বছরের জুলাইয়ে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়।
জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ২৮ হাজার। এর শিক্ষক-কর্মচারী আছেন প্রায় পাঁচ লাখ। এর বাইরে স্বীকৃতি পাওয়া ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সাড়ে পাঁচ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। এছাড়া স্বীকৃতি না পাওয়াসহ সব মিলিয়ে সাড়ে ৯ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসা রয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এমপিওভক্তির কাজটি আগামী জুনের মধ্যেই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই এটি কার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।