প্রতিবন্ধীরা শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে, সরকারের পদক্ষেপ জরুরী
শিক্ষার উন্নয়নে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিলেও প্রতিবন্ধী শিশু, কিশোর, শিক্ষার্থীরা অনেকাংশেই বঞ্চিত। বিশেষায়িত বিদ্যালয় না থাকা, সরকার যেসব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে সে বিষয়ে প্রচারণার ঘাটতি ও সচেতনা সৃষ্টির অভাবে মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ পিছিয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মৃত্তিকা প্রতিবন্ধী শিশু পাঠশালা’ আয়োজিত সুশীল সমাবেশে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৩৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে বাজিতপুর উপজেলায় রয়েছে ৩ হাজার ৬০০ জন। এদের মধ্যে শিশু ১ হাজার ২০০ এবং তাদের ১ হাজারই বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের এই বিপর্যকর চিত্র সারাদেশের।
এদিকে এ বছরের শুরুর দিকে সরকারি একটি সমীক্ষা জানায়, দেশে এখনো পর্যন্ত শনাক্ত প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৩ জন। অর্থাৎ দেশে প্রতিবন্ধীদের প্রকৃত সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও বেশি ছাড়া কম নয়। কাজেই জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হলে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে পড়া এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার বিষয়ে সরকারের যথাযথ উদ্যোগের বিকল্প নেই। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মতো দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি হলেও মানসম্মত বিশেষায়িত বিদ্যালয় স্থাপন আবশ্যক।
আবার সরকার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষাবৃত্তি দেয় তা অনেক প্রতিবন্ধী বা তার অভিভাবকের কাছেই অজানা। এ খবর রাখেন না অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও। কাজেই অর্থের অভাবে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রোধে সরকারি সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি তার যথযথ প্রচারণাও জরুরী। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীরা পিছিয়ে থাকার আরও একটি কারণ সরকারি উদ্যোগ গ্রামের থেকে শহরমুখী বেশি। অথচ অধিকাংশ প্রতিবন্ধী থাকে গ্রামে। তাই প্রতিবন্ধী কল্যাণ শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বরং গ্রামে বেশি বেশি দৃষ্টি দেয়া দরকার।