‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকার খবরে’ সরগরম ফেসবুক
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি আগামী ৩১ জুলাই করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে হঠাৎ করেই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পাঁচ বছরের আগের একটি বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরগম দেখা দিয়েছে।
বেসরকারি টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পাতায় ২০১৬ সালের ১০ জুলাই দেয়া পোস্টে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে।’’
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যটি ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনার পরে দেওয়া। এতে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ছয় জঙ্গি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করতেই মূলত সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেছিলেন।
তবে প্রায় পাঁচ বছর পর হঠাৎ করেই আজ শনিবার (১০ জুলাই) ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পাতার খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়টি এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়টি একত্রিত করে অনেকটা হাস্যরসে মাতেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদুল আলম অভি লিখেছেন, ‘‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেড় বছর ধরে অনুপস্থিত। কাকে জানাব?’’
রাকিব খান নামে একজন শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘‘সেসময় আমি টানা তিন মাস স্কুলে যাইনি। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়তাম। দেশে তখন জঙ্গি অভিযান চলতেছিল। পরে এ নিউজ দেইখা পরের দিনই স্কুল গেছিলাম।’’
ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী যোবায়ের আহমেদ আকাশ লিখেছেন, ‘‘২০১৬ সালের নিউজ নিয়ে যারা এখন যুক্তি আর কমেন্টের বন্যা ভাসিয়ে দিচ্ছে, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।’’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মারুফ অনেকটা মজা করেই লিখেছেন, ‘‘না জানি এই দেড় বছরে কত শিক্ষার্থী আইএসের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদেরকে খুঁজে বের করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’’
এ ছাড়া ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার কাছাকাছি সময়ে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের মাঠের কাছে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারি ও ৭ জুলাই ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের মাঠের কাছে বড় ধরনের এ দুটি হামলার ঘটনা ঘটে।
উভয় স্থানের হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজধানীর বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, স্কলাসটিকা স্কুল ও বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র। বেশ কয়েক মাস ধরে তারা নিখোঁজ ছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে সেসময় ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।