ঢাবির বিজ্ঞপ্তিতে শাস্তি বা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়নি

ঢাবির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে দুটি সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনাম
ঢাবির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে দুটি সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনাম  © স্ক্রিনশট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গবেষণা ও শিক্ষার মান নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত কার্টুন ও প্রতিবেদন নিয়ে ঢাবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কিত সংবাদে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিজ্ঞপ্তির কোথাও আইনি পদক্ষেপ বা শাস্তির কথা না বলা হলেও সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি এমন দাবি করা হচ্ছে।

ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের অনলাইন বাংলা সংস্করণে গত শুক্রবার (১৮ জুন) ‘‘ঢাবিতে ‘চা-চপ-সিঙ্গাড়া’ নিয়ে কথা বললেই শাস্তি’’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দৈনিক সমকালের অনলাইনে  ‘ঢাবি ও ভিসির সমালোচনা করলে আইনি পদক্ষেপ’ শিরোনামে একই দাবি করা হয়। পরে অবশ্য শিরোনাম পরিবর্তন করা হয়। পরিবর্তিত শিরোনামটি ছিল ‘স্বল্পমূল্যের খাবার ও পিসিআর ল্যাব নিয়ে খণ্ডিত তথ্য এসেছে গণমাধ্যমে’। গুগল ক্যাশ সার্ভিসের মাধ্যমে পুরনো সংবাদটি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস ফ্যাক্টচেক টিমের দৃষ্টিগোচর হয়।

রঙ্গ রসাত্মক কন্টেন্ট সাইট ইয়ারকি’র ফেসবুক পেজে গত শুক্রবার (১৮ জুন) এ বিষয়ে দুটি ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করা হয়। দুটি পোস্টেই ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা ভিসির সমালোচনা করলে আইনগত ব্যবস্থা’ কথাটি লেখা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধাশীল। একইসঙ্গে, কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমালোচনার রীতিনীতি ও মূল্যবোধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের মানহানি ঘটায়, তাহলে দেশের আইন যে তার প্রতিকার দেয় সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।’ 

সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘খণ্ডিত তথ্য’ সংবলিত ব্যঙ্গচিত্র ও সংবাদ প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এমন অভিযোগ তুলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাবি প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ঢাবি টিএসসি ক্যান্টিনের চা-চপ-সমুচার স্বল্পমূল্য নিয়ে উপাচার্যের দেওয়া বক্তব্য, করোনার নমুনা পরীক্ষা এবং এ বিষয়ে গবেষণায় পিছিয়ে থাকার বিষয়ে ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়।

তবে পুরো বিজ্ঞপ্তির কোথাও সমালোচনা করলে সরাসরি আইনি পদক্ষেপ বা শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটি বলা হয়নি। বিজ্ঞপ্তি নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদনটি দেখুন।

এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশে বস্তুনিষ্ঠতা সকলের কাম্য। আসলে এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি সাংবাদিক লেখকেরাই পরিষ্কার করবেন। তবে সংবাদের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা সব সময় আমরা কামনা করি।’

গত  একটি ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর সাথে কথা বলেন ঢাবির প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী এবং অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান।

সাবেক এই শিক্ষকেরা বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের সমালোচনা করেছেন। তবে বিজ্ঞপ্তিতে শাস্তি বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন দাবি করেননি।

এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ঢাকা ইউনিভার্সিটি এক্স-স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনেও অনেকে এ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ও ক্ষোভপ্রকাশমূলক পোস্ট দিয়েছেন। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ