কিউএস বিষয়ভিত্তিক র‍্যাঙ্কিং নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার জয়কলির

  © সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) এবারের (২০২৪) বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) কিউএস তাদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

এই র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশের শুধু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। তবে এ তালিকায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ভারতের ৪৯টি ও পাকিস্তানের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।

এদিকে, এবারের তালিকায় ‘বিশ্বসেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ভারতের ৪১, পাকিস্তানের ১১ ও বাংলাদেশের ২ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি ও বুয়েট)’ স্থান হয়েছে দাবি করে জয়কলি (Joykoly-জয়কলি)’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই স্ট্যাটাসটি দেয়া হয় ওই পেজ থেকে। পরে রাত ৮টা পর্যন্ত সেই স্ট্যাটাসে প্রায় আড়াই হাজার রিএক্ট এবং দেড়শ কমেন্ট-শেয়ার করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে ওই পেজে দেখা একটি (01678-343450) নম্বরে কয়েকবাব ফোন দেয়া হলেও কেউ রিসিভ করেনি। 

তবে এই তথ্যটির উৎস হিসেবে দ্যা ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন ব্যবহার করেছে ফেসবুকের এই পেজটি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ। এর আগে ওই বছরের ২২ মার্চ ২০২৩ সালের বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছিল কিউএস। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

এবারের র‍্যাঙ্কিংয়েও আলাদা দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। প্রধান বিষয় (ব্রড সাবজেক্ট এরিয়া) ক্যাটাগরিতে পাঁচটি বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, সোশ্যাল সাইন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আটর্স অ্যান্ড হিউমেনিটিস, লাইফ সাইন্স অ্যান্ড মেডিসিন ও ন্যাচার সাইন্স। 

এর মধ্যে  ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ৬৪ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে ৩০৫তম স্থানে আছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫০১-৫৫০ এর মধ্যে।

সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ক্যাটাগরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৪৫১-৫০০ এর মধ্যে। আর আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিস ক্যাটাগরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫০১-৫৫০ এর মধ্যে। তবে বাকি দুই  ক্যাটাগরিতে দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়নি।

তাছাড়া নির্দিষ্ট বিষয় (স্পেসিফিক সাবজেক্ট) ক্যাটাগরিতে এবার ৫৫টি আলাদা আলাদা বিষয় রয়েছে। এ বছর বিশ্বের ৯৫টি দেশের মোট ১ হাজার ৫৫৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৬ হাজার ৪০০টির বেশি একাডেমিক প্রোগ্রামের মর্যাদা ও গবেষণাকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান দেওয়া হয়েছে।

ব্রড সাবজেক্ট ক্যাটাগরি এবার সেরা ৫০০ তালিকায় ভারতের ৪৯, পাকিস্তানের ১৭ ও বাংলাদেশের ২ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়েছে। তবে স্পেসিফিক সাবজেক্ট ক্যাটাগরিতে কতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়েছে সেটা যাচাই করে দেখা হয়নি।

ফলে ২০২৩ সালের বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিংকে ২০২৪ সালের র‍্যাঙ্কিং বলে প্রচার করছে জয়কলি, যা বিভ্রান্তিকর এবং ভুল তথ্য।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিউএস র‍্যাঙ্কিং ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ‘সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের’ তালিকা প্রকাশ করছিল; ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা। 

কিউএস বছরের বিভিন্ন সময়ে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং বাই সাবজেক্ট, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং রিজিয়নসহ একাধিক র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে থাকে। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‍্যাংকিংগুলোর একটি মনে করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ