‘অটোপাস’ আন্দোলন ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা, আজ পদত্যাগ করছেন ঢাকা বোর্ড চেয়াম্যান
এইচএসসির সাতটি বিষয়ে অটোপাসের দাবিতে কয়েকটি শিক্ষা বোর্ডে আজ সোমবারও (২১ অক্টোবর) আন্দোলন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। এ কারণে বোর্ডগুলোয় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এর আগে রোববার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বোর্ড কর্মকর্তা জানান, ‘অটোপাস’র দাবিতে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। পরে এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
জানা গেছে, রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার পর ‘এইচএসসি ব্যাচ ২০২৪’-এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা ১টার দিকে মিছিলটি বোর্ডের ফটকের সামনে পৌঁছায়। তাদের মধ্যে পাস করা ও অকৃতকার্য শিক্ষার্থী আছেন।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, বোর্ডের ভেতরে তাদের ওপর হামলা হয়। এই হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। তারা এই হামলার বিচার চান। হামলায় আহতরা হলেন- সরকারি শাহবাজপুর কলেজের মো. সাগর (১৭), নারায়ণগঞ্জ কলেজের শাহরিয়ার (১৮), কিশোরগঞ্জের ওয়ালি নেওয়াজ খান কলেজের ওয়াহিদ (১৯), বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফাহমিদা হোসেন (১৭) ও গোপালগঞ্জের শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের আশুতোষ (১৮)।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের নানা অসঙ্গতি নিয়ে অভিযোগ জানাতে বোর্ডের এসেছিলেন। তবে, বোর্ডের কর্মকর্তার কর্মচারীরা তাদের ওপর হামলা করেন। যদিও বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, হুড়হুড়িতে কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বোর্ডের নানা সম্পদ বিনষ্টের চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বাতিল ছয়টি পরীক্ষা যে পদ্ধতিতে ম্যাপিং করে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে, তাতে চরম বৈষম্য তৈরি হয়েছে। সিলেট ও মাদ্রাসা বোর্ডের মাত্র তিটি পরীক্ষা হয়েছে, কিন্তু তাদের সাবজেক্ট ম্যাপিং করায় রেজাল্ট ভালো হয়েছে। অথচ আমরা ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফেল করেছি। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।
আরো পড়ুন: আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যানের
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল পাওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। আজ সোমবার পদত্যাগ করবেন তিনি। এর আগে রোববার রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ চেয়েছে। আমি পদত্যাগ করলে যদি তারা আন্দোলন স্থগিত করে, তাহলে আমি পদত্যাগই করব। সোমবার আমার পদত্যাগপত্র জমা দেব।
আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। তারা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে রাতে সেখানে না থেকে বাসায় চলে যাওয়ার অনুরোধ করতেও দেখা যায়। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও রাতে তারা চলে যান।