আড়াই লাখেরও বেশি আবেদন করেনি
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৭৫ জন শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। বাকী ২ লাখ ৬৮ হাজার ২২২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেনি। ভুয়া ভর্তি আবেদনও এর একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে আরও দুইবার আবেদনের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্ত: শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, ২ লাখের বেশিও আবেদন করেনি। তাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার আবেদনের সুযোগ রয়েছে। চাইলে শিক্ষার্থীরা আবেদন করে ভর্তি হতে পারবে। ভুয়া ভর্তি আবেদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ভুয়া আবেদনের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। অনেকে অভিযোগ করেছে। কিছু কিছু স্কুল-কলেজের প্রতারক এটি করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, এবার মাধ্যমিকের ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৭৫ জন। এর মধ্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫৯৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ হিসেবে এবার মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েও ২ লাখ ৬৮ হাজার ২২২ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আবেদন করেনি।
অনলাইন ও মুঠোফোনের এসএমএসের মাধ্যমে গত ১৩ মে থেকে শুরু হয়ে এ প্রক্রিয়া চলে ২৪ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫১ জন অনলাইনে এবং ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ জন এসএমএসের মাধ্যমে কলেজে ভর্তির আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।
একাদশ ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, ২৫ থেকে ২৭ মের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। ১০ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। এরপর আরও দুই দফায় ভর্তির আবেদন গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে ১৯ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত আর ২১ জুন ফল প্রকাশ করা হবে।
তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ের আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে ২৪ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত আর ২৬ জুন ফল প্রকাশ করা হবে। ২৭ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে ভর্তির কাজ শেষ করে ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করতে পেরেছে। তবে মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার ভর্তির সুযোগ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ঢাকা বোর্ডের ৩ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৮ জন, রাজশাহীর ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৬ জন, চট্টগ্রামের ৯৩ হাজার ৭৩৩ জন, কুমিল্লার ১ লাখ ২৫ হাজার ৪৬৮ জন, যশোরের ১ লাখ ২০ হাজার ৯৮ জন, বরিশালের ৬৬ হাজার ১৮০ জন, সিলেটের ৬৮ হাজার ৫১৯ জন এবং দিনাজপুর বোর্ডের ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭২ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেছে। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডের ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৬ জন, কারিগরি বোর্ডের ২৮ হাজার ৫৭ জন এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫৯৩ শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির আবেদন করেছে বলে জানা যায়।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লাহ বলেন, যারা প্রথম পর্যায়ে আবেদন করেনি তারা আবারও আবেদন করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা হয়তো পছন্দ মতো কলেজ পায়নি, তাই আবেদন করেনি। আবার দ্বিতীয় পর্যায়ে নতুন করে করতে পারবে। এমনকি যারা প্রথম পর্যায়ে আবেদন করেনি তারও করতে পারবে। তারপর শেষে তিনদিন ভর্তি করা হবে।
শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, এবার প্রায় আড়াই লাখের মতো একাদশের ভর্তির আবেদন করেনি। দেশের যেসব স্কুল কাম কলেজ রয়েছে এসব কর্তৃপক্ষ চায় তাদের শিক্ষার্থীরা ওখানে থাকুক। তাছাড়া কিছু ভুয়া আবেদনও পড়েছে। এসব কারণে হয়তো ওই শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেনি।