ফের বাড়ছে সাধারণ ছুটি
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। যদিও ইতোমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০-তে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১১২ জন। এদিকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এর আগে দুই দফা সাধারণ ছু্টি বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে পহেলা বৈশাখের সরকারি আনুষ্ঠানিকতাও। আর সামনের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এই ছুটি আরও চারদিন বাড়তে পারে। অর্থাৎ ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ছুটি ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে চিন্তা করছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রটি বলছে, এর আগে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি থাকলেও পরদিন শুক্রবার ও শনিবারের (১০ ও ১১ এপ্রিল) সঙ্গে ১২ ও ১৩ এপ্রিলকে (রবি ও সোমবার) পহেলা বৈশাখের ছুটির সঙ্গে মেলানো হয়। সে হিসেবে ছুটি বেড়ে যায় ৫ দিন। সামনেও ১৪ এপ্রিলের পর দু’দিন অফিস খোলা থাকায় সেটিকেও শুক্র ও শনিবারের সঙ্গে মিলিয়ে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি করার চিন্তা রয়েছে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছেন করোনায় সৃষ্ট পরিস্থিতির উপর।
তথ্যমতে, করোনা ভাইরাসের কারণে ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি তিন দফা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি আর কতদিন স্থায়ী থাকবে, তা কেউ বলতে পারছেন না। এ কারণে পরিস্থিতিই ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে।
গত রোববার (৫ এপ্রিল) জনপ্রশাসন সচিব ইউসুফ হারুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগামি সপ্তাহে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ এমনিতেই সরকারি ছুটি। এই দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা বাতিলের চিঠি ইস্যু করেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে ৩০ মে পর্যন্ত: এদিকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আসছে রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে উদ্ভুত পরিস্থিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির ঘোষণা। যা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে ঈদের পর খোলার ঘোষণা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। কেননা ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু হয়ে যাবে। এদিকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ। বিদ্যমান শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও ১৪ এপ্রিলের পর রোজার ছুটির আগ পর্যন্ত কর্মদিবস আছে মাত্র ৬টি।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
এর আগেও দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঈদুল ফিতরের পর খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে গণভবনে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে ঘোষিত সাধারণ ছুটি পহেলা বৈশাখের ছুটি সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়েছে। আবার এর ১০ দিন পর শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। ফলে রমজান এবং ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে আগামী ৩০ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।