২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:০৪

২০১৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫১ অর্জন

শেষ হচ্ছে আরও একটি বছর। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সফলতা ও ব্যর্থতার পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। একইভাবে শিক্ষামন্ত্রণালয় গত একবছরে তাদের ৫১টি অর্জনের কথা তুলে ধরেছে। নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি, শিক্ষার মান উন্নয়ন, প্রশ্নফাঁস ও গুজব প্রতিরোধ করা, পাবলিক ও বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫১টি অর্জন তুলে ধরেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো-

১) সবচেয়ে বড় অর্জন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা। বিগত প্রায় দশ বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর একসঙ্গে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
২) চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে পরিমার্জনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
৩) পাবলিক ও বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
৪) ২০২০ সাল থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬৪০টি স্কুলে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ২০২১ সাল থেকে মাধ্যমিকের সকল ক্লাসে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৫) প্রশ্নফাঁস ও গুজব প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।

৬) শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৩ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার নতুন ভবনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে।

৭) শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২৪৯৪ জন নতুন জনবল অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৮) শিক্ষার মান উন্নয়নে এক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।

৯) বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন ও এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করা হয়েছে।

১০) হবিগঞ্জ ও চাঁদপুরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

১১) মাদ্রাসা বোর্ড আইন ২০১৯ পাস করা হয়েছে।

১২) ১০ বছর ধরে ঝুলে থাকা শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

১৩) খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

১৪) কোচিং বাণিজ্য বন্ধে কার্যকর বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

১৫) জিপিএ গ্রেডিং সিস্টেমে সমন্বয় করা। সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জিপিএ ৫ এর পরিবর্তে জিপিএ ৪ প্রবর্তণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

১৬) একাদশ শ্রেণির ৩০ লক্ষ পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো হয়েছে।

১৭) হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন রোধে কমিটি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

১৮) র‍্যাগিং প্রতিরোধে এন্টি বুলিং বিধিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

১৯) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কর্ণার’ চালু করা হয়েছে।

২০) ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একটি সফল পাইলটিং প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়েছে। এবং ২০২০ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে তিনটি বিষয়ে (শারিরীক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, চারু ও কারু, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা) ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি কার্যকর করা হবে। অন্যান্য বিষয়ে শতকরা ২০ ভাগ নম্বর ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে দেয়া হবে। এ উদ্দেশ্যে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সমস্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে  টি ডায়রি সরবরাহের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

২১) বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ২য় গ্রেডের ৩টি পদ সৃজন এবং ৩য় গ্রেডে ৯৮টি পদ আপগ্রেড করা হয়েছে। এছাড়াও ২য় ও৩য় গ্রেডের আরও ৩৩৫ পদ সৃজন। আপগ্রডের কাজ চলমান রয়েছে। অভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ১২৫০০টি পদ সৃজনের কার্যক্রমের কাজ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

২২) দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নিয়োগের জটিলতার আংশিক অবসান ঘটিয়ে ৭০২ জন চাকরি প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

২৩) সমস্ত সরকারি কলেজকে ই-ফাইলিংয়ের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

২৪) সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং করার জন্যে মাঠ পর্যায়ের মনিটরিং ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় আশা করছে , এই মনিটরিংয়ের ফলে অতি দ্রুত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

২৫) সারা দেশের মাধ্যমিক স্কুলে আকস্মিক পরিদর্শন চালু করা হয়েছে। এতে বিনা অনুমতিতে শিক্ষকদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির হার প্রায় শূন্যের কৌঠায় নেমে এসেছে।

২৬) সারা দেশে ২০ হাজার স্কুলে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হয়েছে।

২৭) উচ্চশিক্ষা অঙ্গনে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
২৮) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের বিরাজমান সমস্যা সমূহের সমাধান করা হয়েছে।
২৯) কলেজগুলোর চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেওয়া,
৩০) স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রসার বেতনকাঠামো কারার জন্য নীতিমালা চূড়ান্ত করা,
৩১) স্কুল ও কলেজ শিক্ষক আত্মীকরণ বিধিমালা প্রণয়ন,
৩২) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ বিধিমালা প্রনয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

৩৩) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য অটিজম একাডেমি স্থাপনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন হয়েছে।

৩৪) বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজিকরণ করা হয়েছে।
৩৫) দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি এবং পাঠদানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।।
৩৬) কওমী মাদ্রসার পাঠ্যসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

৩৭) শিক্ষার্থীদের আমিষের ঘাটতি মেটাতে পরিপত্র জারি করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৬০০০ স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। ২০২০ সালে পর্যায়ক্রমে সকল স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হবে।

৩৮) বন্ধ থাকা শিক্ষা বৃত্তিসমূহ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

৩৯) মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

৪০ ) প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য মনিটরিং করা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেক স্কুলে ওজন ও উচ্চতা মাপার যন্ত্র ক্রয় করা হবে।

৪১) রিপ্রোডাকটিভ হেলথ ও জেন্ডার ইকুইটি বিষয়ে সব স্কুলে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

৪২) পারিবারিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল স্কুলে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৪৩) মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বয়স বিবেচনা করে পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা সকল অভিভাবকদের হাতে পৌছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৪৪) কো-এডুকেশন চালু আছে সকল স্কুলে যে সব স্কুলে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা ওয়াশ ব্লক তৈরী করা হয়েছে।

৪৫) শিক্ষার্থীরা যেন বিদ্যালয়ে খেলাধুলা ও শরীর চর্চা করার সুযোগ ও প্রণোদনা পায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৪৬) ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জান শীর্ষক একটি প্রজেক্ট ৭ম শ্রেনির সকল শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। প্রজেক্টের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক প্রায় লাখ খানেক রিপোর্ট ও ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে।

৪৭) একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে ২০২০ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের ৭টি সফট স্কিলসে দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সফট স্কীলসগুলো হল- Creativity, Criticality, Morality, Social Commitment, Employability, Adaptablity and Health। এই সফট স্কীলসগুলো ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে মূল্যায়িত হবে।

৪৮) নিয়মিতভাবে প্রতি বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষাঙ্গন পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

৪৯) শতবর্ষী ১৩টি কলেজকে ‘সেন্টার অব এক্সেল্যান্স হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

৫০) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেওয়াল ঘেঁষে সিগারেটের দোকান না রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

৫১) নীতি শিক্ষার অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে সততা স্টোর চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল স্কুল কলেজে সততা স্টোর চাল করা হবে।