০৪ এপ্রিল ২০২২, ১০:১৪

সুন্দর পিচাইয়ের কাছে সোমবার কেন গুরুত্বপূর্ণ

সুন্দর পিচাই   © সংগৃহীত

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই। সম্প্রতি মার্কিন পত্রিকা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর দৈনন্দিন চর্চা, অভ্যাস, আরও নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

পিচাই বলেন সোমবার (সপ্তাহের শুরু) সকালটা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় আমি সেই জরুরি বিষয়গুলো খুঁজে বের করি, যেগুলো নিয়ে আমাকে পুরো সপ্তাহ কাজ করতে হবে। কলম আর নোট খাতা নিয়ে বসে তিন থেকে পাঁচটি বিষয় লিখে ফেলি। এতে পুরো সপ্তাহের জন্য কাজগুলো গুছিয়ে ফেলা যায়। জরুরি কাজ বলতে চার-পাঁচটি বিষয়ই থাকে। ওগুলো মাথাতেই গেঁথে যায়। তবু শুক্রবার (সপ্তাহের শেষ ভাগে) আমি নোট খাতায় একবার চোখ বুলাই। দেখি—জরুরি কোনো বিষয়ে নজর দিতে ভুলে গেলাম কি না। ভুলে গেলে পরের সোমবার আবার সেটা নোট খাতায় টুকে রাখি। প্রতি সপ্তাহে এভাবেই নিজের কাজগুলো, জরুরি বিষয়গুলো একে একে গুছিয়ে নিই।


ছুটির দিনের অভ্যাস

মেডিটেশন চর্চাটা খুব দরকার। কিন্তু আমি এখনো সেই অভ্যাস করে উঠতে পারিনি। তবে আমার কাছে হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। আমি যখন থেকে নিয়ম করে হাঁটা শুরু করলাম, তখন থেকেই উপলব্ধি করেছি, এ অভ্যাস কতটা উপকারী। হাঁটা আর দৌড়ানো—দুটিই আমার বেলায় বেশ কাজে দিয়েছে। মহামারির দিনগুলোতে আমি আমার কুকুরকে নিয়ে রোজ হাঁটতে যেতাম। হাঁটতে হাঁটতে পডকাস্ট শুনতাম। সেখান থেকে এনএসডিআর (নন-স্লিপ ডিপ রিলাক্সেশন) অডিও–ভিডিও ট্র্যাকের ব্যাপারে জানতে পারি।

দিনটা ছুটির হোক বা কাজের—সব সময় আমার মাথায় একসঙ্গে অনেক কিছু চলতে থাকে। ফলে মেডিটেশনের জন্য আমি কখনোই মনকে একদিকে নিবিষ্ট করতে পারি না। তাই যখনই সুযোগ পাই, মনকে স্থির করার জন্য আর চাপমুক্ত থাকার জন্য ইউটিউবে গিয়ে ১০-২০ মিনিট বা আধঘণ্টার এনএসডিআর ট্র্যাকগুলো শুনি। এটা অবশ্য শুধু ছুটির দিনে নয়, প্রায়ই করি।

নিয়মিত এ রুটিনের বাইরে ছুটির দিনে আলাদা করে ব্যায়ামের জন্য একটু সময় বের করি। শনি আর রোববার অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে একটু বেশি সময় দিই শরীর আর মনের পেছনে। পুরো সপ্তাহ নিজেকে সক্রিয় রাখার জন্য এ সময়টুকু খুব জরুরি।

দেখা-শোনা-পড়া

ইদানীং আমি নতুন কিছু শেখা আর কাজের ফাঁকে হালকা বিশ্রামের জন্য প্রচুর পডকাস্ট শুনছি। ইউটিউবে নানা ধরনের ভিডিও দেখছি। বেশির ভাগ সময় আমি শিক্ষণীয়, বড় দৈর্ঘ্যের ভিডিওগুলো দেখি। যেমন কিছুদিন আগে এমআরএনএ টেকনোলজির ব্যাপারে জানতে ইচ্ছা হচ্ছিল। কারণ, ওই প্রযুক্তি নিয়ে জীবনে কোনো দিনও আমি কাজ করিনি, সামনে হয়তো করবও না, কিন্তু জেনে রাখার আগ্রহ হচ্ছিল।

আবার কোনো কোনো দিন পদার্থবিজ্ঞান বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নতুন কিছু জানতে খুব ইচ্ছা হয়। তখন চট করে সেই বিষয়ের কোনো ভিডিও দেখে ফেলি। সময়টা আমি ভীষণ উপভোগ করি। মোটকথা, আমার নিজের কাজের ক্ষেত্র বাদে অন্য আর যেকোনো সেক্টরের নতুন নতুন বিষয় জানার সুযোগ পেলেই আমার বেশ ভালো লাগে। এতেই আমার বিশ্রাম। ইদানীং মহাবিশ্বতত্ত্ব আর জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের বইগুলো পড়ে বেশ মজা পাচ্ছি। খেলার প্রতিও আমার আগ্রহ আছে। কাজ আর বই পড়ার ফাঁকে সুযোগ পেলেই ফুটবল আর ক্রিকেট খেলা দেখি। আর বাড়িতে ফিরে আমার স্ত্রী আর বাচ্চারা যা দেখতে ভালোবাসে, সবাই একসঙ্গে তা-ই দেখি। পরিবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার, তাদের জানার এটাও একটা সুযোগ। তাই এ চর্চা নিয়ম করে চালিয়ে যাচ্ছি