তসলিমা নাসরিনের আইডি থেকে ‘রিমেম্বারিং’ তুলে নিল ফেসবুক
মৃত্যু বিষয়ক ভাবনা নিয়ে ফেসবুকের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টের একটি পোস্ট করেছিলেন নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এই স্ট্যাটাসের ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই মঙ্গলবার দুপুর থেকে ফেসবুক ওই লেখিককে মৃত দেখাচ্ছে।
পরে তসলিমা নাসরিন ফেসবুককে উদ্দেশ্য করে টুইট করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি বেঁচে আছি। কিন্তু ফেসবুক আমার অ্যাকাউন্টকে রিমেম্বারিং করে রেখেছে। কী দুঃখের খবর! কীভাবে এটা করতে পারলে? দয়া করে আমাকে আমার অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দাও।’
এদিকে, রাতে তার আইডি থেকে ‘রিমেম্বারিং’ তুলে নিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে তসলিমা নাসরিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘পুনরুত্থান’।
সাধারণত কোনো ফেসবুক ব্যবহারকারী মারা যাওয়ার পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে সেই অ্যাকাউন্ট ‘রিমেম্বারিং’ করে দেয় ফেসবুক।
আগের দিন মৃত্যু বিষয়ক ভাবনা নিয়ে তসলিমা নাসরিন লিখেছিলেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক যে আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও জীবন বাঁচুক। কারও চোখ আলো পাক। প্রচার হোক, কিছু মানুষও যেন প্রেরণা পায় মরণোত্তর দেহ দানে।’
‘অনেকে কবর হোক চান, পুড়ে যাক চান, কেউ কেউ চান তাঁদের শরীর পোড়া ছাই প্রিয় কোনও জায়গায় যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আশা করেন তাঁদের দেহ মমি করে রাখা হোক। কেউ আবার বরফে ডুবিয়ে রাখতে চান, যদি ভবিষ্যতে প্রাণ দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘অসুখ বিসুখে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করি এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করবো। কোনও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই, ঠিক যেমন বিশ্বাস নেই কোনও কুসংস্কারে। জীবনের একটি মুহূর্তেরও মূল্য অনেক। তাই কোনও মুহূর্তই হেলায় হারাতে চাই না। মরার পর আমরা কিন্তু কোথাও যাই না। পরকাল বলে কিছু নেই। পূনর্জন্ম বলে কিছু নেই। মৃত্যুতেই জীবনের সমাপ্তি। আমার জীবন আমি সারাজীবন অর্থপূর্ণ করতে চেয়েছি। মৃত্যুটাও চাই অর্থপূর্ণ হোক।’