আইটিতে এ বছর আরো ১০ লাখ কর্মসংস্থান হবে
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে এরই মধ্যে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে এই খাতে দেশে আরও ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’ আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করার সময় এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের অধিক তরুণ, যে হার উন্নত বিশ্বে ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি নয়। এ ছাড়া, প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ আমাদের শ্রম বাজারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, চলমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লব দেশে-বিদেশে দক্ষ জনশক্তির জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের অভূতপূর্ব সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। পাশাপাশি, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং ‘ডেল্টা প্লান ২১০০’ এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম দেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানে পারদর্শী মানুষের বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারের সঠিক নীতি ও ফলদায়ী কর্ম পরিকল্পনার ফলে বাংলাদেশের তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে এরূপ আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর কর্মসংস্থানের সুবিধা ভোগ করছে।’’
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে ৫৭৪৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৭১ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬৬ হাজার ২০৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে আকারের দিক থেকে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে পাঁচ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। আর শতাংশের হিসাবে শিক্ষায় সার্বিক বরাদ্দ বেড়েছে আট দশমিক ৬৭ শতাংশ।’
বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২৬ হাজার ৩১১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার প্রাথমিকে এক হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা বেশি প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া এবারের বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ব্যয়ের জন্য ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব আনা হয়েছে। গত অর্থবছরে এটি ৩৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ছিল। সে হিসাবে গতবারের চেয়ে এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে তিন হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব আনা হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে ৮০৯ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভাগটির জন্য এবার নয় হাজার ১৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল আট হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।
এবার ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে এ বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেটের ঘাটতি রয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবের আগে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে বাজেট অনুমোদন করা হয়। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বাজেট সংসদে উপস্থাপনের অনুমতি দিয়ে তাতে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
নতুন ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মূল বাজেটের তুলনায় ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি।