উৎপাদনশীলতায় ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের তরুণরা পিছিয়েছে

  © প্রতীকী ছবি

উৎপাদন সম্ভাবনায় ২০১৮ সালে ভারতের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও এবার পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত মানবপুঁজি সূচক-২০২০ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে । এতে ২০১৮ সালের তুলনায় মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, শুধুমাত্র ভারত নয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান ব্যতীত অন্যান্য সকল দেশের তুলনায়ই মানবসম্পদ সূচকে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১৭৬ টি দেশের মধ্যে ১২৩তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ভারত রয়েছে ১১৬ তম অবস্থানে।

সাধারণত একটি দেশের শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক হলে গড়ে কত শতাংশ উৎপাদনশীলতা দেখাতে পারবে তার ওপর নির্ভর করে এই সূচক তৈরি করা হয়।

বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবসম্পদ সূচকে বিশ্বে গড় উৎপাদন সম্ভাবনার হার ৫৬ শতাংশ, উন্নত বিশ্বে এই হার ৭০ শতাংশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ৪৮ শতাংশ। এর মধ্যে ভারতের একজন শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হলে গড়ে ৪৯ শতাংশ উৎপাদনশীলতা দেখাতে পারবে।

অপরদিকে, বাংলাদেশের একজন শিশু উৎপাদনশীলতা দেখাতে পারবে ৪৬ শতাংশ এবং করোনা ভাইরাসের কারণে এটি আগামী বছর আরও হ্রাস পেয়ে ৪৫ শতাংশ হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় খাবারের পুষ্টি মান কমে যাবে। এর ফলে শিশুরা খর্বাকৃতির বা বেটে হবে এবং শিশুদের শিক্ষনের সময় কমবে। এছাড়া দীর্ঘদিন  বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মাথাপিছু জিডিপিএ ৪ শতাংশ কমায় অনেক শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়বে এবং বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা শিশু কিশোরদের সংখ্যা ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

বিশেষ করে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে মেয়েরা। বিদ্যালয় বন্ধ এবং পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় মেয়েদের বাল্যবিবাহের হার যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি যৌন নির্যাতনও বাড়বে।

তবে শুধুমাত্র বাংলাদেশই নয়।বিশ্বব্যাংক মনে করছে দারিদ্র্য বিমোচনসহ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে পৃথিবী গত এক দশকে যে সফলতা অর্জন করেছে, কোভিড-১৯-এর ধাক্কায় তা হুমকির মুখে। বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোতে এর প্রভাব হবে মারাত্মক।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোভিড-১৯-এর ধাক্কায় বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ৬৮ লাখ শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়তে পারে। প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্টসংখ্যক শিশু ঝরে পড়ে। তার সঙ্গে অতিরিক্ত এই পরিমাণ শিশু ঝরে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। ঝড়ে পড়া এই শিশুদের ৬০ শতাংশের বয়স ১২-১৮ বছরের মধ্যে। পারিবারিক আয় হ্রাসের কারণে তারা পাকাপাকিভাবে বিদ্যালয় ছাড়বে বলেই মনে করছে বিশ্বব্যাংক।

২০১৮ সাল থেকে মানবসম্পদ সূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বিশ্বব্যাংক। এই সূচকে ২০১৮ সালে ১৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১০৬তম। বর্তমানে ১৭৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩তম।


সর্বশেষ সংবাদ