৪০% মওকুফ মানছে না, পুরো ভাড়া চায় মেস মালিকরা
রাজশাহী মহানগরে শিক্ষার্থীদের মেসভাড়ার পুরো টাকা আদায় করার নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা মেসের ভাড়া ৪০ শতাংশ মওকুফের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু সোমবার ‘রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতি’ নামের একটি সংগঠন ‘জরুরি নোটিশ’ দিয়ে আরেকটি নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে মেসের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।
জানা গেছে, ১০ মে রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনায় বসে জেলা প্রশাসকের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এপ্রিল মাস থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ৬০ শতাংশ মেসভাড়া পরিশোধ করবেন। এ সিদ্ধান্ত অনেক শিক্ষার্থী মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু এক মাস না যেতেই অন্য একটি সংগঠন থেকে আরেক সিদ্ধান্ত এল।
নতুন সংগঠন রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির নেতারা নোটিশে তিনটি সিদ্ধান্তের কথা জানান। তাদের সিদ্ধান্তগুলো হলো, সব মেসমালিক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বোর্ডারদের কাছ থেকে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের সিটভাড়া সম্পূর্ণ গ্রহণ করবেন। তবে যেসব পরিবার করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, সেই পরিবারের বোর্ডারদের ক্ষেত্রে মেসের মালিকেরা নিজ বিবেচনায় মানবিক দিক থেকে ভাড়া সর্বোচ্চ মওকুফের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এছাড়া জুলাই মাসের ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সমিতি কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে। সব মেসমালিক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বোর্ডারদের সঙ্গে সিট ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে সদয় আচরণ করবেন। তবে কোনো বোর্ডার বিরূপ আচরণ করলে তা সমিতিকে জানাতে বলা হয় ওই নোটিশে।
এক মাসের মাথায় নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘রাজশাহীর মেসভাড়া মওকুফের দাবি’ নামে ফেসবুক গ্রুপে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে আগে যে ৪০ শতাংশ মেসভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্ত পেয়েছিলেন, তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত মানবেন। নতুন এ সিদ্ধান্তকে তাঁরা প্রত্যাখ্যান করবেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তাঁরা প্রয়োজনে গণহারে মেস ছেড়ে দেবেন। এখন এই পরিস্থিতিতে যেখানে পুরো ভাড়া মওকুফ করার কথা, সেখানে নতুন করে আবার পুরো ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। এটা তাঁদের পরিবারের জন্য এই মুহূর্তে জুলুম। তাঁরা কোনোভাবেই এখন এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না, জানান করোনা সংকটে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হকের উপস্থিতিতে দুটি সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের অনুরোধে ২৮ মে মেসমালিকদের সঙ্গে বসেছিলেন। তিনি যেহেতু আগে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তাই আর নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। এখন যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন তাঁরা, এটা তাঁদের সিদ্ধান্ত। এখানে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। তবে সেই সভায় তাঁদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সর্বোচ্চ মানবিকতা দেখাতে অনুরোধ করা হয়।