১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:১১

ডেসটিনির সব গাছ ছাগলে খেয়ে ফেলেছে

  © সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ ছিল ২ হাজার ৮ শত কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিলেই জামিন পাবেন ডেসটিনির দুই কর্ণধার। ডেসটিনির সৃজনকৃত ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ওই অর্থ পরিশোধের কথা ছিল তাদের। কিন্তু তিন বছরেও ওই আদেশের বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে মুক্তিও মেলেনি।

গতকাল রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) জামিন শুনানিতে ডেসটিনির আইনজীবীর কাছে আদালত জানতে চান, গাছ কোথায় গেলো? জবাবে ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি মৃদু হেসে বলেন, গাছ তো ছাগলে খেয়ে ফেলেছে! পরে তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী অধিকাংশ গাছ কেটে নিয়েছে। যার কারণে অর্থ পরিশোধ সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের অর্থ-পাচার আইনে সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছর।

আবেদনকারীরা সাত বছর ধরে কারাগারে আছেন। নিম্ন আদালতে মামলার বিচারের যে ধীরগতি তা শেষ হতে কত বছর লাগবে জানিনা। বিচারাধীন মামলায় তাদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা সংবিধান পরিপন্থী। তারা অসুস্থ এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে জামিন দেওয়া হোক। গতকাল রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি চলে।

জামিনের বিরোধিতা করে দুদক কৌসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, ডেসটিনির প্রস্তাবের ভিত্তিতে দুটি শর্তে জামিন মঞ্জুর করেছিলো আপিল বিভাগ। কিন্তু ওই দুটি শর্তের একটিও তারা বাস্তবায়ন করেনি। যার কারণে জামিন পায়নি। এর মধ্যে একটি ছিল গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮শত কোটি টাকা পরিশোধ করা। ওই শর্ত বাস্তবায়ন না করে এখন জামিন চাচ্ছেন এটা আইনানুগ হয়নি। আবেদন খারিজ করা হোক। শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছে আপিল বিভাগ।

প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদক কলাবাগান থানায় দুটি মামলা দায়ের করে। ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর আপিল বিভাগ দুটি শর্তে ডেসটিনির দুই শীর্ষ ব্যক্তি এমডি রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন মঞ্জুর করে। ওই শর্তে বলা হয়েছিল, ডেসটিনির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তাদের সৃজনকৃত বাগান থেকে ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছয় সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে।

জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র হলফনামা আকারে দাখিলের পর তারা জামিন পাবেন। এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় শর্ত হিসাবে সরকারি কোষাগারে দিতে হবে নগদ ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকা। এই দুই শর্তের একটি পূরণ করলেই তারা জামিন পাবেন। সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া ওই অর্থ ডেসটিনিতে বিনিয়োগ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেসব ক্ষতিগ্রস্তর মাঝে বিতরণ করতে দুদক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।

গত তিন বছরেও আদালতের ওই শর্ত তারা পূরণ করতে পারেননি। ওই আদেশ সংশোধন চেয়ে আবেদন করলে ২০১৭ সালের পহেলা ডিসেম্বর তা খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।