তরুণ ৬ অ্যাপ ডেভেলপারকে পুরস্কৃত করল বিডিঅ্যাপস
ছয় তরুণ অ্যাপ ডেভেলপারকে পুরস্কৃত করেছে দেশের অন্যতম অ্যাপ-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম বিডিঅ্যাপস। গত সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত বিডিঅ্যাপস ডেভেলপার সামিট ২০১৯-এ এ পুরস্কার দেয়া হয়।
পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন- গেম চেঞ্জার বিভাগে আবু বকর সিদ্দিক, সেরা মহিলা অ্যাপস ডেভেলপার বিভাগে রাফিয়া তুন নাহার ওরিন, তরুণ অ্যাপস ডেভেলপার বিভাগে অভিন মাহমুদ, সেরা পেশাদার ডেভেলপার বিভাগে কাওসার আলী, সেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বিভাগে হাসিব আহমেদ নেসার এবং পিপলস চয়েস বিভাগে আলমগীর অপু।
বিডিঅ্যাপস’র মাধ্যমে নিজেদের তৈরি অ্যাপস দিয়ে গ্রাহকদের নানারকম ডিজিটাল সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এমন ৫শ’ জন অ্যাপস ডেভেলপার এই সামিটে অংশ নেন। দেশজুড়ে অ্যাপ ডেভেলপারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে এই আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস’র (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির এবং আইসিটি বিভাগের আওতায় স্টার্টআপ বাংলাদেশ’র বিনিয়োগ উপদেষ্টা টিনা এফ জাবিন।
এ সময় রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, চিফ ডিজিটাল সার্ভিসেস অফিসার (সিডিএসও) শিহাব আহমেদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিডিঅ্যাপস দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রবির সিডিএসও বলেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে বিডি অ্যাপস দেশের বৃহত্তম অ্যাপ্লিকেশন ইকোসিস্টেমে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৭ হাজার অ্যাপস ডেভেলপারের তৈরি ১৪ হাজার অ্যাপস অ্যাপস্টোরটিতে রয়েছে। চলতি বছর শেষে প্ল্যাটফর্মটিতে ১০ হাজার অ্যাপস ডেভেলপারদের ২০ হাজার অ্যাপ থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটির সাথে ৫০ হাজার অ্যাপস ডেভেলপারকে যুক্ত করবে বিডিঅ্যাপস। তার ইচ্ছা দেশের তরুণরা ‘আমি বিডিআ্যাপস করি’- এই পরিচয়ে একদিন গর্ব বোধ করবেন।
এছাড়া আগ্রহী সকল ডেভেলপারদের www.bdapps.com সাইটটি ভিজিট করার এবং অ্যাপ তৈরি করে প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে অর্থোপার্জনের সুযোগ নেয়ার আহবান জানান। বিডিঅ্যাপস টিমকে support@bdapps.com আইডিটিতে মেইল করলে অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত যে কোন সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
সামিটে উপস্থিত অ্যাপস ডেভেলপাররা এই মূহুর্তে তাদের যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হয় সে বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বর্তমান করকাঠামো তাদের অগ্রগতিতে এক প্রতিবন্ধকতা বলে উল্লেখ করেন তারা। এসময় রবি ও এয়ারটেল ছাড়া অন্য অপারেটরদের গ্রাহকের কাছেও তারা যেন তাদের নির্মিত অ্যাপ বিক্রি করতে পারেন সে সুযোগ তৈরির প্রত্যাশা করেছেন বিডিঅ্যাপস ডেভেলপাররা।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অ্যাপ বিক্রি করতে পারার সুযোগ তৈরির জন্য তাগিদ দেন তারা। পাশাপাশি বর্তমানে বিদেশী গ্রাহকদের সাথে আর্থিক লেনদেনের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে এ দিকটিও আলোচনায় উঠে আসে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইসিটি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন,গত দশ বছরে দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিডিঅ্যাপস’র মাধ্যমে দেশের তরুণ অ্যাপস ডেভেলপারদের একত্রিত করার জন্য রবি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের তরুণ অ্যাপ ডেভেলপাররা যাতে তাদের দক্ষতা বাড়াতে পারে এজন্য আইসিটি বিভাগ দেশের ৬৪টি জেলাতে শেখ কামাল ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে। অন্যদিকে বিডিঅ্যাপস’র এই উদ্যোগ আইসিটি বিভাগের অগ্রযাত্রাকে আরো সুসংহত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
অ্যাপস ডেভেলপারদের আশ্বাস দিয়ে রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিডিঅ্যাপস’র সহায়তায় অ্যাপস ডেভেলপাররা যেন নিজেদের ডিজিটাল ব্যবসা আরো প্রসারিত করতে পারেন এ জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই আমরা নেব। দেশজুড়ে স্থানীয় অ্যাপ ডেভেলপারদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোতে বুট-ক্যাম্প শুরু করবে রবি।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি জাতি হতে চাইনা যারা শুধু বিদেশে তৈরি অ্যাপগুলো ব্যবহার করে। আমরা নিজেরাই অ্যাপ ডেভেলপ করে বিশ্ব দরবারে অন্যতম অ্যাপ নির্মাতা দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। দেশ হিসেবে আমরা যেন সে অবস্থানে পৌঁছাতে পারি এজন্য বিডিঅ্যাপস সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।